Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

মৃত্যুর মিছিল ভারী হলেও মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছেই কক্সবাজারে, ৪ বছরে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩০

 মাদক সেবনে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবাসহ নানা মাদকদ্রব্য। মাদক সেবন ও বিক্রি বন্ধে প্রশাসন সক্রিয় থাকলেও যেন কোন অবস্থাতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা। ফলে দিন দিন বাড়ছে মাদকসেবির সংখ্যা। যুবসমাজসহ নানা শ্রেনী পেশার লোক ঝুঁকছে মাদাকের দিকে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দীর্ঘদিন মাদক সেবনে একের পর এক মরতে থাকলেও মাদক সেবির সংখ্যা যেন বাড়ছেই।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ৪ বছরে অতিরিক্ত মাদক সেবনে মারা গেছে ৩০ জনেরও বেশি লোক। আর চিহ্নিত মাদকসেবি রয়েছে দেড়শ-এরও অধিক।

এভাবে চলতে থাকলে ধবংস হবে যুব সমাজ, অবক্ষয় হবে সামাজিক ব্যবস্থাপনা, বাড়বে অপরাধ কর্ম এবং অবনতি হবে আইনশৃংখলার। এমনটাই বলছেন সচেতন মহল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের প্রত্যাশা দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করতে হবে কক্সবাজার বাসি তথা পর্যটন নগরীর কল্যানে।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে এবং বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ বছরে অতিরিক্ত মাদক সেবনে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে, শহরের পিটিআই স্কুল সংলগ্ন শাহেদ, চরপাড়ার জাবেদ, ঘোনাপাড়ার দুদু, মেতরপাড়ার নীবর, বাহারছড়ার নুরু প্রকাশ নুরু চোরা, বাহারছড়ার ফুতুইয়া, পাহাড়তলীর কানকাটা মহাজন, চরপাড়ার ইমাম হোসেন, রহমানিয়া মাদ্রাসার চইক্কা চোরা, পেশকার পাড়ার আবদুল্লাহ্ ও কমির, নতুন বাহারছড়ার ওসমান, বৈদ্যঘোনার চাইল্যাসহ আরো অনেকে।

আর চিহ্নিত মাদকসেবিদের মধ্যে রয়েছে, মধ্যম বাহারছড়ার বাহাদুর, হামিদ,  হ্নীলার কালু, বড় বাজারের মুজিব, কোট বাজারের আবদুল্লাহ , টেকপাড়ার নেজাম, মুজিব, আঙ্গুর, আব্দুর ছবি,   উখিয়ার খায়ের আহম্মদ, নুনিয়ারছড়ার BmgvBj, আলাউদ্দিন, শেখ আহম্মদ,  বৈদ্যঘোনার ওসমান, কামাল, সিরাজ, বদি আলম, বাহারছড়ার বদিআলম, চুনচুনি,  পেশকার পাড়ার হামিদ, জিসান, পাগলা খালেক, টুকুন্যা চোরা, পাড়ার খোকন, আলী আকবর কামাল প্রকাশ চোরা কামাল,   পিটিআই স্কুল সংলগ্ন এলাকার আকাশ, মোঃ আলী প্রকাশ মরাকুরা,  কানাইয়া বাজারের মোবারক, খোকন, পূর্ব রাখাইন পাড়ার বোলা, পূর্ব রাখাইন পাড়ার বুরুং, চিলা, থি মো, মং ফু রু, চরপাড়ার রুবেল, আব্দুল হাকিম, সাগর, অভিশেখ, মো. ইসমাইল, কোপবাজারের মনোয়ার, কাজল ও রাখাইন পাড়ার জেসমিনসহ আরো অনেকে।

খবর নিয়ে জানা যায়, তাদের মধ্যে অনেকে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তারা মাদক সেবনের টাকা যোগাতে চুরি থেকে শুরু করে লিপ্ত হচ্ছে নানা ধরনের খারাপ কাজে। অনেকে আবার মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত।

এ ব্যাপারে মাদক নিরাময় কেন্দ্র নোঙর- এর নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আলম রাশেদ বলেন, দিন দিন মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মূল কারন হল, কক্সবাজারে মাদকের সহজলভ্যতা। এই শহরে চাইলেই মাদক সংগ্রহ করা যায়। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরো সক্রিয় হতে হবে।

অনেক মাদকাসক্ত ব্যক্তি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা শেষে স্বাভাবিক হলেও, পুনরায় মাদকাসক্ত কেন হচ্ছে এমন প্রশ্নে বলেন, নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা শেষে স্বাভাবিক হওয়ার পরেও তাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নজরদারিতে রাখা হয়। কিন্তু সঙ্গদোষ এবং সচরাচর মাদক পাওয়ার কারনেই আবারও মাদক সেবন করছে তারা। তবে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী চললে কখনও পুনরায় মাদকাসক্তের সম্ভাবনা থাকেনা।

কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ ইলিয়াস কবির বলেন, পরিবারের অবহেলা এবং সঙ্গদোষের কারনে অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই পরিবারকে সবসময় সচেতন থাকতে এসব ব্যাপারে। মূলত ধূমপানই হচ্ছে মাদকের প্রাথমিক ধাপ। তাই অভিভাবকের খেয়াল রাখতে হবে সন্তান যেন ধূমপায়ী না হয়।

এডভোকেট হাবিবুর রহমান বলেন, মাদকের এই আগ্রাসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ দায়ী। কারন শহরে বেশি কিছু চিহ্নিত মাদক বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। যেখান থেকে অবাধেই মাদক ক্রয় করা হচ্ছে। এসব বিক্রয় কেন্দ্রেগুলো রয়েছে, শহরের বড়বাজার পূর্ব মাছ বাজার, পশ্চিম মাছ বাজার, রাখাইন পাড়া, নুনিয়ার ছড়া ও বৈদ্যঘোনাসহ বিভিন্ন এলাকা। দীর্ঘদিন ধরে ওসব এলাকায় মাদক বিক্রি হলেও যেন কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা। এটি নিশ্চয় প্রশাসনেরই ব্যর্থতা।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়–য়া জানান, মাদকদ্রব্য বরাবরই মানব স্বাস্থের জন্য মারাত্মক। অনেক মাদকসেবি ওভার ডোজ (অতিরিক্ত মাদক নেওয়া) নেয়। এর ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে, ক্যান্সার থেকে শুরু করে নানা ধরনের মারাত্মক রোগ হয়। তাছাড়া দীর্ঘদিন মাদক সেবনের ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে মাদকসেবিরা যেকোন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আর এজন্যই মাদকসেবিদের মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে দিন দিন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন