মুজুরী বৃদ্ধির জন্য কাউখালীর রাঙামাটি টেক্সটাইল মিল শ্রমিকদের মানববন্ধন
কাউখালী প্রতিনিধি:
মুজুরী বৃদ্ধির দাবিতে কাউখালীতে অবস্থিত রাঙ্গামাটি টেক্সটাইলস মিলের শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছে। দাবি আদায়ে দৈনিক দুই ঘন্টা কর্মবিরতির ঘোষনা দিয়েছে তারা। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল ১১ টার মিলের বাইরে মানববন্ধন করেছে শ্রমিক সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ সমিতি।
রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলস শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি অরুন বিকাশ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জীবন চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্ত তালুকদার, প্রচার সম্পাদক মাইকেল চাকমা ও অর্থ সম্পাদক কিরণ চন্দ্র চাকমা।
জানাযায়, ১৯৯৭ সাল থেকে সার্ভিস চার্জের ভিত্তিতে চলে আসা তিন পার্বত্য জেলার একমাত্র টেক্সটাইল মিলটি কম সার্ভিস চার্জ ও দক্ষ শ্রমিকসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৮ বছর বন্ধ থাকার পর হাজারো সমস্যা মাথায় নিয়ে ২০১৫ সালের ২৯ এপ্রিল প্রায় দেড়শ শ্রমিক নিয়ে পূনরায় উৎপাদনে যায় মিলটি। বর্তমানে বিটিএমসির অধীনে পরিচালিত হওয়া এ মিলের শ্রমিক সংখ্যা ১২৯ জন।
দৈনিক ১২০ টাকা মুজুরীর ভিত্তিতে কাজ করা এসব শ্রমিকরা নিজেদের উজাড় করে দিয়ে মিলটিকে পূণরায় দাড় করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চালু হওয়ার পর বিগত তিন বছরে শ্রমিকদের দৈনিক মুজুরী বেড়েছে মাত্র ১০ টাকা। অর্থাৎ ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। যা কার্যকর করা হয় ২০১৭ সালের জুলাই থেকে। বিটিএমসি কর্তৃক তিন বছরে মাত্র ১০ টাকা বৃদ্ধির এমন বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় মিলে কর্মরত শ্রমিকরা।
প্রতিবাদ স্বরূপ শ্রমিক সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ সমিতি মঙ্গলবার মানববন্ধনের মাধ্যমে দৈনিক দুই ঘন্টা কর্মবিরতি কর্মসূচী ঘোষনা করে। দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর কর্মসূচীর হুমকি দেয় শ্রমিকরা।
সমিতির সভাপতি অরুন বিকাশ চাকমার জানান, বিটিএমসি তিন বছরে মাত্র ১০ টাকা মুজুরী বৃদ্ধি করে শ্রমিকদের সাথে ঠাট্টা করছে। যাদের পরিশ্রমে বন্ধ হওয়া মিল পূণরায় উৎপাদনে গেছে তাদের সাথে এমন আচরণ মেনে নেয়া হবেনা। তিনি জানান, মিল চালাতে হলে কর্তৃপক্ষকে শ্রমিকদের দৈনিক মুজুরী ১৫০-২০০ টাকায় উন্নীত করতে হবে।
শ্রমিক মুন্নি আক্তার জানান, একজন কাজের বুয়ার বেতন এখন চার থেকে ছ’হাজার টাকা। আমরা তাদের চেয়েও খারাপ হয়ে গেছি। একদিন বিদ্যুৎ না থাকলে কর্তৃপক্ষ ওই দিন আমাদের আর বেতন দেন না। এছাড়া এত কম মুজুরীতে চার ছেলে মেয়ে নিয়ে কিভাবে সংসার চালাবো বুঝতে পারছিনা।
এব্যাপারে কথা হয় মিলের ব্যবস্থাপক (কারিগরি) ও মিল ইনচার্জ মো. নুরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, বিটিএমসির সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের দৈনিক মুজুরী ১০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া সার্ভিস চার্জের উপর চলে আসা এ মিলে লাভের উপর ভিত্তি করে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়। সার্ভিস চার্জ কম হওয়ায় এর অতিরিক্ত মুজুরী বৃদ্ধি করলে মিল বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় নাই।
তিনি আরও জানান, ১০ টাকা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হলেও এখানে আমার কোন হাত নেই। কৃর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।