মুকুলে ভরে গেছে পানছড়ির আম্র কানন

পানছড়ি প্রতিনিধি:

“আম্র মুকলের মৌ মৌ গ্রান, আকুল করে প্রাণ”- কবির এই অনুভুতির ছোঁয়াকে শতভাগ রূপ দিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার প্রতিটি আম্র কাননে এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। সেই গন্ধে এই মুকুল থেকে ঐ মুকুলে ছুটছে মৌমাছির দল।

এ আম্র মুকুল ঝুলে থাকার উপভোগ্য দৃশ্য নজরে পড়ে উপজেলার ছোট থেকে বড় বড় প্রতিটি গাছে। মাত্র ৩/৪ থেকে বছর বয়সী গাছগুলিও মুকুলের ভারে নুইয়ে পড়ার নয়নাভিরাম চিত্র একবার দেখলে মনে দাগ কাটবে অনেকদিন।

গেল বছর উপজেলায় আমের মুকুল নজরে আসেনি। তাই বিভিন্ন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাড়া-পল্লীতে জাতীয় নির্বাচনী আলাপচারিতার পাশা-পাশি চলছে আম্র মুকুল নিয়ে যত কথা। প্রবীন মুরব্বীরা কেউ কেউ বলছে আম চাষীদের ভাগ্যর দুয়ার এবার খুলে গেছে আবার কেউ কেউ বলছে বড় ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগের এটি পূর্ব লক্ষন। আবার কেউ বলছে হাজার হাজার গাছের আম্র মুকুল পানছড়িকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে।

কংচাইরী পাড়া এলাকার সফল কৃষক মংশী মারমা জানান, আম্র পালি, মল্লিকা, গোপাল ভোগ, রাঙ্গোয়াই জাতের আম দিয়েই সাজিয়েছে আম্র কানন। বর্তমানে বাগানের সহস্রাধিক গাছে শোভা পাচ্ছে আম্র মুকুল কোন কোন গাছে গুটিও এসেছে। তবে কিছু কিছু গাছে মুকুল আসে দেরীতে। বিশেষ করে রাঙ্গোয়াই জাতে। এবারের আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন বাম্পার হবে বলে তিনি ধারনা করছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, জমির উদ্দিন, নয়ন্টু চাকমা, নিমাই নাথ, দিবস চাকমা, মানিক মিয়া, শিল্পী দেবনাথ, থৈয়াংগ মারমা, এশাপ্রু মারমা, নির্বান কুমার চাকমা, প্রবেশিকা চাকমা, সন্তোষ চাকমা, বিজয় চাকমা, শুখময় চাকমা, শুভাশীষ চাকমা জানান, মুকুলের ভারে গাছ নুইয়ে পড়ছে। গতবারের তুলনায় অনেক অনেক বেশী। বাম্পার ফলনের ব্যাপারে সবাই আশাবাদি।

উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা অরুণাংকর চাকমা জানান, মুকুল থেকে এখন গুটি বের হচ্ছে। বাগানে গতবারের তুলনায় অনেক বেশী মুকুল এসেছে। গতবারে হেক্টর প্রতি আমের ফলন ছিল ৬.৫ মেট্টিক টন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। এভাবে অনুকুলে থাকলে ফলন হেক্টর প্রতি ৮ থেকে ১০ মেট্টিক টন পর্যন্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

পানছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আলাউদ্দিন শেখ জানান, পাক্ষিক ভ্রমনসূচীর আওতায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় বাগানের তদারকী করছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শও প্রদান করছে। পরিবেশ, অনুকুল আবহাওয়া ও ঝড়-বৃষ্টিতে মুকুল বা গুটি ক্ষতিগ্রস্থ না হলে নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে যাবার আশা করছেন।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন