মিয়ানমার সরকারকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বললো জাতিসংঘ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দেশটির সরকারের কাছ থেকে প্রতিবেদন চেয়েছে জাতিসংঘ। ছয় মাসের মধ্যে ওই প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) জাতিসংঘের নারী অধিকারবিষয়ক একটি পর্যবেক্ষক প্যানেল মিয়ানমার সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানায়। নারী-বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)’র পক্ষ থেকে মিয়ানমারে আগস্ট থেকে চলা সহিংসতায় নিহত নারী ও কিশোরীদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।

মিয়ানমার সরকারকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বললো জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে সম্প্রতি কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে জাতিসংঘের এক অনুসন্ধানী দল। সেখানে গিয়ে তারা ভয়াবহ যৌন নিপীড়নের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন।

এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজ আর ভারতের এনডিটিভিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের ধারাবাহিকভাবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা তুলে আনে। জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তা সেই সময় দাবি করেন, রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে তাড়ানোর অস্ত্র হিসেবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণকে ব্যবহার করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার ২৩ জন স্বাধীনধারার বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক প্যানেল রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের ওপর সংঘটিত ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের বিস্তারিত জানতে চেয়েছে।

মিয়ানমার সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী কেন ও কীভাবে এই ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন চালিয়েছে এবং তাদের হামলায় কত কিশোরী ও নারী নিহত হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ জানাতে হবে।

সেইসঙ্গে এসব অপরাধে জড়িত সেনাসদস্যসহ অন্যান্য অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে কিনা এবং হয়ে থাকলে তাদের বিচার প্রক্রিয়া কতদূর অগ্রসর হয়েছে তাও জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্যানেলটি আগামী ছয় মাসের মধ্যে মিয়ানমারের কাছ থেকে রোহিঙ্গা নারীদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের কাছে হস্তান্তর করবে।

উল্লেখ্য, এ বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ চালানো শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে। নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ও মানবতার পক্ষের মানুষেরা। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী। দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি’ও রোহিঙ্গাদের পক্ষে কোনও ইতিবাচক ভূমিকা নেননি।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন