মিয়ানমার থেকে ভারী অস্ত্র কিনছে পাহাড়ি সংগঠনগুলো

কমল দে:

পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনগুলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের কাছ থেকে একে-ফোরটি সেভেন, একে টুয়েন্টি টু’র মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র কিনছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। মূলত ভারত-বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় চীনের তৈরি অস্ত্র বেচাকেনা করছে তারা। ভারতের মিজোরামের সাইহা এলাকার বাসিন্দা পলিওন’ই এসব অস্ত্রের মূল হোতা বলে জানায় র‌্যাব। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে যৌথ বাহিনীর অভিযান জোরদারের তাগিদ নিরাপত্তা বিশ্লেষকের।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য মতে, সোমবার রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ১৫ থেকে ২০ সদস্যের দলটির প্রত্যেক সদস্যই ব্যবহার করে অত্যাধুনিক এবং ভারি অস্ত্র। এর মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে যেসব গুলি’র খোসা উদ্ধার করা হয়েছে তার অধিকাংশ’ই এসএমজি এবং একে-ফোরটি সেভেনের গুলি বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে পার্বত্য জেলাগুলোতে ভারি অস্ত্রের ব্যবহার মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। বাঘাইছড়ি ঘটনার আগে গত বছরের তেসরা মে একইভাবে ভারি অস্ত্র দিয়ে ব্রাশফায়ার করে ৫ জনকে হত্যা করা হয়।

ডি আই জি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, পাহাড়ে চারটা গ্রুপ কাজ করে। চারটা গ্রুপই যেভাবেই হোক সশস্ত্রতে পরিণত হয়েছে। এ কারণেই এই খুনগুলি হচ্ছে।

বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ডেভিল ট্র্যাঞ্চ হিসাবে পরিচিত গহীন পাহাড়ি এলাকায় চলে অস্ত্রের বেচাকেনা। মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপগুলো থেকে কেনা অস্ত্রই পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো ব্যবহার করছে। ভারতের মিজোরামের সাইহা এলাকার বাসিন্দা পলিওন’ই এসব অস্ত্রের মূল হোতা বলে দাবি র‍্যাবের।

লে কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারতের যে বর্ডার ওই এলাকা থেকে তারা অন্যান্য বিদ্রোহীদের থেকে একে-ফোরটি সেভেন, চাইনিজ এসএমজি, এম সিক্সটিন অথবা এম ফোর এ ধরনের সংক্রিয় অস্ত্র এনে আমাদের পাহাড়ে যে সন্ত্রাসী রয়েছে তাদের কাছে বিক্রি করছে।

পার্বত্য শান্তি চুক্তির অংশ হিসাবে বেশ কিছু সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অস্ত্রধারী এবং চাঁদাবাজদের বিস্তার ঘটছে বলে মনে করছেন এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, তারা এখন ফ্রিহ্যান্ড চলাফেরা করছে। সেখানে মানুষের ওপর অত্যাচার বেড়ে গেছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্র অভিযান চালানো উচিত।

যৌথবাহিনী তিন পার্বত্য জেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২০১৭ সালে ১২০টি, ২০১৮ সালে ১৩০টি এবং চলতি বছরের প্রথম দু’মাসে ২০টি অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

সূত্র: সময়নিউজ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন