মিয়ানমারে ১১ শিশু পাচারের ঘটনায় আটক বৌদ্ধ ভিক্ষু উসরীকে জেল হাজতে প্রেরণ

স্টাফ রিপোর্টার:

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রাঙ্গামটির ১১ শিশুকে মিয়ানমারে পাচারের ঘটনার মূল হোতা বৌদ্ধ ভিক্ষু উসরীর তিন দিনের রিমাণ্ড শেষে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। বৃহস্পতিবার জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হলে আদালত রিমাণ্ড শুনানি শেষে রোববারের তারিখ ঘোষণা করেণ। পুলিশ উসরীকে আরো ১০দিনের রিমাণ্ড আবেদন করেছিল। এর আগে পুলিশ দু’দফায় ৮দিন রিমাণ্ডে নেয় উসরীকে।

রিমাণ্ডে বৌদ্ধ ভিক্ষু উসরী নারী ও শিশু পাচারে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশকে। সে আর্ন্তজাতিক নারী ও শিশু পাচারের সদস্য বলে স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে। এই নারী ও শিশুদের মিয়ানমারের আশ্রমে রেখে বিদেশি এনজিও কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জন করতে বাধ্য করা হয়। পরে সেখান থেকে আর্ন্তজাতিক নারী পাচারকারীদের সহায়তায় চীন, থাইল্যন্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে পাচার করে দেয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, উসরী আর্ন্তজতিক নারী ও শিশু পাচারের সক্রিয় সদস্য। সে ও প্রভাবশালী কয়েকজন পাহাড়ীর সহায়তায় গরীব ও অসহায় পরিবারকে টার্গেট করে। তাদের শিশু ও নারীদের বিনা খরচে লেখা পড়ার কথা বলে উসরী তার আশ্রমে নিয়ে তাদের সাথে প্রথমে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। পরে তার সাঙ্গপাঙ্গরাও নারী ও শিশুদের ধর্ষণ করে। তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা বলে মিয়ানমারে পাচার করে। এই নারী ও শিশুদের মিয়ানমারের বিভিন্ন আশ্রমে রেখে বিদেশি এনজিও কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জন করাতে বাধ্য করে। পরে সেখান থেকে আর্ন্তজাতিক নারী পাচারকারীদের সহায়তায় চীন, থাইল্যন্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে পাচার করে দেয়।

পুলিশ সূত্র আরো জানায়, রিমাণ্ডে উসরী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেও পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে অসলগ্ন কথাবার্তা বলে। সে জানিয়েছে তার গডফাদার বাংলাদেশি হলেও বেশির ভাগ সময় মিয়ানমারে অবস্থান করে। তাকে আটক করা গেলে নারী পাচারের মূল হোতা ধরা পরত।

এদিকে, বুধবার বিকেলে মিয়ানমার থেকে উদ্ধার হওয়া ৮ শিশুকে চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ সময় প্রত্যেক শিশুকে পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। এর আগে গত সোমবার উদ্ধার হওয়া আরো ৩ কন্যাশিশুকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।