Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

মিয়ানমারের আবদার মেনে নিলো বাংলাদেশ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে সাত লাখের মতো রোহিঙ্গা ফেরত যাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী অবস্থান করছে বাংলাদেশে। এছাড়া ১৯৯২ সালের নীতি ও শর্ত অনুযায়ী বর্তমান চুক্তি হওয়ায় স্বস্তির কিছু দেখছেন না তারা।

গত ২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে বলা হয়েছে— ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর ও এ বছরের ২৫ আগস্টের পরে যারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে। যারা এর আগে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বর্তমান চুক্তি শেষ হওয়ার পরে তাদের বিষয়টি পৃথকভাবে ভাবা হবে।

এছাড়া শনিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৯২ সালের চুক্তি অনুসরণ করতে চায় মিয়ানমার। সেভাবেই এবারের চুক্তি করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাশে শহীদুল হক অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘মিয়ানমার মুখে বলে একটা, কিন্তু করে আরেকটা। এ বিষয়টাই সবচেয়ে অস্বস্তিকর।’

মিয়ানমার যে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা গত বছরের অক্টোবর থেকে পালিয়ে এসেছে। বাকি তিন লাখের জন্য পৃথক ব্যবস্থা হতে পারে যদি এই সাত লাখ রোহিঙ্গা ফিরে যায় তারপরে।

সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাশের কথায়, ‘গোটা প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কোনও আলোচনা হয়নি। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এ প্রক্রিয়া সম্পাদিত হবে তাদের মাধ্যমে! এর সঙ্গে জড়িত আছে ইমিগ্রেশন, পুলিশ ও সীমান্ত বাহিনী। এই তিনটিই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছেন একজন কর্মরত (সার্ভিং) জেনারেল। এছাড়া মিয়ানমারে ক্ষমতার মূল চাবিকাঠি সামরিক বাহিনীর হাতে। তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা না হওয়াটা অস্বস্তিকর।’

জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার অংশগ্রহণের বিষয়ে শহীদুল হক মনে করেন, বিষয়টি পুরোপুরি মিয়ানমারের অধীনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার ভাষ্য, ‘শুরু থেকে এই সংস্থা সম্পৃক্ত না থাকলে আমার আশঙ্কা অনেকে ফিরে যেতে পারবে না।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হওয়াটা ইতিবাচক। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে আঞ্চলিক শক্তি বিশেষ করে চীন, ভারত ও অন্যান্য শক্তি যেমন রাশিয়া ও অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে।’

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সংহতি বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি মনে করেন, তাদের শক্তিকে খাটো করে দেখার উপায় নেই।

জাতিসংঘের থার্ড কমিটিতে ভোটাভুটিতে মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিয়েছিল চীন ও রাশিয়া। আর ভারত কোনও অবস্থান নেয়নি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের ভাষ্য, ‘এই চুক্তিটি ইতিবাচক। তবে এমন মনে করার কোনও কারণ নেই যে, এই ১০ লাখ রোহিঙ্গা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবে। এ কারণে বাংলাদেশের উচিত হবে তাদের জন্য আর্থিক, সামাজিক, স্বাস্থ্য, পরিবেশ বিপর্যয় ইত্যাদি ভেবে একটি মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা করা।’

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে দলে দলে প্রথমবার পালিয়ে আসে ১৯৭৮ সালে। তখন তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তিস্বাক্ষর হয়। এর অধীনে ছয় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ফিরে গিয়েছিল।

১৯৯২ সালে আবার দলে দলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা। ওই সময় তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে আরেকটি সমঝোতা হয়। এর অধীনে ১৯৯৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা ফিরে যায় মিয়ানমারে।

২০১২ সালে রাখাইনে জাতিগত দাঙ্গা এবং ২০১৬’র অক্টোবর ও এ বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বর্বরোচিত নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ছাড়িয়ে গেছে ১০ লাখ।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন