মানিকছড়িতে রাবার বাগানের গাছ কেটে সাবার

3(1)

মানিকছড়ি প্রতিনিধি :
মানিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী রাবার বাগানস্থ ‘সাহারা এগ্রো ফার্মের’ লীজ ও ক্রয়কৃত প্রায় ২শত একর ভূমির কিছু অংশে সৃজিত বাগানের অর্ধশতাধিক মূল্যবান গাছ কেটে সাবার করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে! এ ঘটনার জন্য বাগান কর্তৃপক্ষ ভূমি বিক্রেতাসহ দুর্বৃত্তদের দায়ী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সাহারা এগ্রো ফার্মস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলার ২১৪ নং ডলু মৌজাস্থ সাবেক ‘রাবার বাগানের লীজ ২০০৭ সালে সরকার কর্তৃক বাতিল হয়। পরে বাতিল লীজের ১২৫ একর টিলা ভূমি নতুন করে লীজ পেতে সরকার নিকট আবেদন করেন সাহারা এগ্রো ফার্মের মালিক পক্ষ। তাঁদের আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মোহাম্মদ মহি উদ্দীন ভূইঁয়া, পিতা- ফজলুল করিম ভূইঁয়া, ৫১ নং হোল্ডিং এ ২৫ একর, মো. রশীদ আলী, পিতা- মুফতী সৈয়দ আলী, ৩৫ নং হোল্ডিং এ ২৫ একর, এস.এম. গোলাম মোস্তফা, পিতা- আবদুর রশিদ, ৩৬ নং হোল্ডিং এ ২৫ একর, আবদুল মন্নান পিতা-বজলুর রহমান, ৩৮ নং হোল্ডিং এ ২৫ একর এবং আবদুস ছালাম মজুমদার, পিতা- আবদুল কাদের মজুমদার, ৫২ নং হোল্ডিং মূলে ১২৫ একর ভূমি লীজ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে আবেদন করেন।যা বর্তমানে লীজের প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া উক্ত ভূমির পার্শ্বে খাস ও রেকর্ডীয় ৬২ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তিদের নিকট থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি’র মাধ্যমে আঞ্চলিক দলিল মূলে ক্রয় করে মোট ১৮৭ একর ভূমিতে ঘেরা(কাটা তারের বেড়া) দিয়ে তাতে যথারীতি বাগ-বাগান সৃজন, মাছের লেক খনন ও গবাদি পশুপালন শুরু করেছেন বাগান মালিক পক্ষ।

গত ১ মার্চ জনৈক মো. এয়াকুব আলীর নেতৃত্ব একটি গ্রুপ লোকজন(লেবার) নিয়ে সাহারা এগ্রো ফার্মের(ঘেরা দেওয়া)ভূমিতে ঢুকে অর্ধশতাধিক মূল্যবান গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্ঠি হয়। পরে বাগান সহকারী ম্যানাজার মো. মোস্তফা বাদী হয়ে মানিকছড়ি থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১০/১২ জন অজ্ঞাত নামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে সারাহা এগ্রো ফার্মের ম্যানাজার মো. জাবেদ অভিযোগ করে বলেন, সাবেক রাবার বাগানের লীজকৃত ভূমি সরকার কর্তৃক বাতিল হওয়ার পর সাহার এগ্রো ফার্মের মালিক পক্ষ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবুল কালাম(মধ্যস্থতাকারী) এর মাধ্যমে সকল ভূমি লীজ ও ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু করেন। এ নিয়ে ওই সাবেক জনপ্রতিনিধির সাথে মালিক পক্ষের একটি চুক্তিনামা(এগ্রিমেন্ট) হয়েছে।

চুক্তিনামা অনুযায়ী মধ্যস্থতাকারী এখনো ভূমির সকল রেকর্ডপত্র মালিক পক্ষকে বুঝিয়ে না দেয়ায় কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। কিন্তু মধ্যস্থতাকারীর নিকট ভূমি বিক্রেতারা টাকা পাবে এমন দাবী করে বিক্রিত ভূমিতে প্রবেশ এবং প্রভাবখাটিয়ে মূল্যবান গাছ-গাছালি কেটে নেয়।

এ বিয়য়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. এয়াকুব আলী গাছ কাটার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, আমার স্ত্রী সালমা আক্তারের নামে রেকর্ডীয় ৪ একর টিলা ভূমি গত ২০০৭ সালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবুল কালাম (মধ্যস্থতাকারী) এর মাধ্যমে বাগান মালিক পক্ষের নিকট ৬ লক্ষ টাকা দর-দাম সাবস্থ্য করে বিক্রি করি। কিন্তু  মাত্র ২ লক্ষ টাকা দিয়ে বায়না দলীল করলেও অদ্যাবদি আর কোন টাকা না পাওয়ায় এবং সংসারে অভাব-অনটন থাকায় সম্প্রতি আমি উক্ত ভূমি আমার হাতে সৃজিত গাছ বিক্রির জন্য আমি একটি জোত পারমিট অনুমোদন করি। যার কারণে আমি লোকজন নিয়ে গাছ কেটেছি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবুল কালাম(মধ্যস্থতাকারী) জানান, সাহারা এগ্রো ফার্ম কর্তৃপক্ষের নিকট এখনো ভূমির মূল্যবাবদ অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। ফলে লোকজন (বিক্রেতা) বিরক্ত হয়ে তাদের জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে মানিকছড়ি থানার এস.আই মো. হেলাল উদ্দীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, এভাবে বৃক্ষ নিধন করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায়(৩ মার্চ) থানায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন