মানিকছড়িতে ভূমি বিরোধের নেপথ্যে বিতর্কিত ভূমি কমিশন আইন পাশে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি

koran

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:

খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র করছে। উপজেলার জনগণ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজ খবর নিয়ে এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিয়ার আলকাস আল মামুন ভুঁইয়া পার্বত্যনিউজকে বলেন, মূলত সংবিধান বিরোধী ও বৈষম্যমূলক ভূমি কমিশন আইন পাশ করাতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বিশেষ মহলের ইন্ধনে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে মানিকছড়িতে ভূমি সমস্যা সৃষ্টি করছে

মানিকছড়িতে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা দিনদিন জটিল হচেছ। যে কোন মুহুর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যেতে পারে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। গত ৫ আগস্ট গচ্ছাবিলস্থ নির্জন এলাকার মাদ্রাসায় ও দরিদ্র কৃষকের খামার বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বাঙ্গালী ওই এলাকার বাঙ্গালীরা রয়েছে আতঙ্কিত ও ক্ষুদ্ধ।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

আমাদের স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতেও উপজেলার গবামারা এলাকায় এক বাঙালী গৃহস্থের বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। বাড়ির মালিক টের পেয়ে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এসময় তিনি দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হলে বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান। সূত্র আরো জানায়, ঘটনাস্থলের আশেপাশের জঙ্গলে পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ৩০/৪০ জনের একটি গ্রুপ অবস্থান নিয়েছে জানতে পেরে বাঙালী পাড়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনী টহল জোরদার করেছে।

ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নিরাপত্তাবাহিনী উপজাতীয় ৬ জনকে আটক করলেও মঙ্গলবার দিন শেষে পরিস্থিতির উন্নয়নের স্বার্থে জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে ও তাদের জিম্মায় শর্ত সাপেক্ষে তাদের ছেড়ে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী।  হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উশ্যে প্রু মারমা ও পাতাছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মানেন্দ্র চাকমার জিম্মায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। যেসব শর্তে তাদের মুক্তি দেয়া হয় সেগুলো হচ্ছে, ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে মিছিল-মিটিংযে অংশগ্রহণ করা যাবে না, ইউপিডিএফ’র সাথে সম্পর্ক রাখা যাবে না, সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজ দেখলে নিরাপত্তাবাহিনীকে খবর দিতে হবে, বাঙালিদের সাথে সহাবস্থান করতে হবে,  সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোন বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

11853820_923288001075051_413745784_n

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার  বকরীপাড়ার ভুমি বিরোধ হঠাৎ করেই সংগত কারণ ব্যতিরেকে গত ৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে শুরু হয়। বকরীপাড়ার জমি সংক্রান্ত পাহাড়ী-বাঙ্গালী সমস্যাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ীরা ইতিমধ্যেই পাঁচটি সমাবেশ ও অবরোধ করে। এসব ঘটনায় তারা গাড়ির উপর হামলা করে ২ টি ট্রাক ভাংচুর করে ২ জন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে গুরুতর আহত করে এবং ছোট হাফছড়িতে একটি নির্মাণাধীন মাদ্রাসা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা পাহাড়ীদের বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে বাঙ্গালীদের দোষারোপ করার মাধ্যমে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির নীল নকশা চালাচ্ছে বলে সুত্রে প্রকাশ।

বাঙালীদের অভিযোগ এসব ঘটনার পেছনে পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ জড়িত। তাদের অভিযোগ, গত ২৯ জুলাই ২০১৫ তারিখে হাতিমুড়ার গবামারা এলাকায় পাহাড়ীরা বাঙ্গালী শ্রমিকদের থেকে ৫ টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয় এবং যদি বাঙ্গালীরা পরবর্তীতে তাদের স্ব স্ব কবুলিয়ত জমিতে কাজ করতে আসে তবে তাদের বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় পাহাড়ীরা। এছাড়াও গত ৫ জুলাই ২০১৫ সন্ত্রাসীরাা পেছন থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ফায়ারের আওয়াজের মাধ্যমে বাঙ্গালীর বিররুদ্ধে পাহাড়ীদের সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার ইন্ধন জোগায়।

manik 1

উক্ত ঘটনায় ওইদিন রাতে উত্তর হাফছড়ির নির্জন এলাকায় বাঙ্গালীদের তৈরী একটি খামার ঘরের কিছু অংশে আগুন দেয় উপজাতি দুর্বৃত্তরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তেই দেখা দেয় উত্তেজনা। ফলে প্রশাসন অবরোধকে ঘিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। যার কারণে পাহাড়িদের ডাকা অবরোধে তেমন কোন সাড়া মেলেনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ির গচ্ছাবিল, হাতিমুড়া, গবামারাসহ বিভিন্ন গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালীদের সাথে নির্জন রামগড় ও মানিকছড়ির নির্জন জনপদ বক্রিপাড়া, মনাধন পাড়া, ওয়াকছড়িপাড়া, উত্তর হাফছড়ি, দক্ষিণ হাফছড়িসহ বেশকিছু এলাকায় ১৯৮৩-৮৪ সালে তৎকালীণ সরকার বাঙ্গালীদের শরণার্থী হিসেবে কবুলিয়ত মূলে ৫ একর টিলা ভূমি বন্দোবস্ত দিয়ে বসবাসের সুযোগ দেয়। পরবর্তীতে পার্বত্য চট্রগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার অজুহাতে বাঙ্গালীদের গুচ্ছগ্রামে একত্রিত করে। আর বাঙ্গালীদের বসতির পাশের ৩য় শ্রেনির ভূমিতে উপজাতিরা বসবাস করত। উভয় সম্প্রদায়ের মাঘে তখন ছিল সম্প্রীতির মিলন। গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালীদের ওইসব পরিত্যক্ত ভূমিতে গিয়ে নিয়মিত চাষাবাদও করত। এক পর্যায়ে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর সম্প্রীতির বন্ধনে ফাটল ধরাতে একটি মহল ভূমি সমস্যাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি বক্রীপাড়াস্থ উপজাতি কর্তৃক পরিত্যক্ত টিলায় আবাদ ও মন্দির নির্মাণকে ঘিরে উভয়ের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সময় উপজাতিদের পক্ষে মানববন্ধন ও অবরোধ, প্রতিবাদে সক্রিয় হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো।

প্রতিরোধে বাঙ্গালীরাও ধীরে ধীরে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। উপজাতীদের দখলে বাধা দিতে গেলে উপজাতি সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি করে আতংক সৃষ্টি করে। ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় উপজেলা প্রশাসন বিতর্কিত ভূমিতে স্থিতবস্থা জারি করে এবং ৫ উপজাতি ব্যক্তির আবেদনের ওপর শুনানীর উদ্যোগ নেন। কিন্তু শুনানীর প্রথম তারিখে ২৬ জুলাই উপজাতিরা অনুপস্থিত থাকায় পুনরায় ৩ আগস্ট শুনানীর তারিখ নির্ধারিত হয়। ফলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল রহমান সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে উপজেলা পরিষদ হল রুমে শুনানী গ্রহন করেন। এ সময় শুনানীতে উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারাম, ইউএনও যুথিকা সরকার, সাব জোন কমান্ডার জিয়াউল হক, ও.সি মো. শফিকুল ইসলাম, কার্বারী উদ্রাসাই মারমা. যুগেশ চাকমা (কার্বারী) নিয়ং মারমা (কার্বারী),ইউপি সদস্য মো. মোশারফ হোসেনসহ ৫জন অভিযোগকারী (উপজাতি)ও ৫ জন বিবাদী (বাঙ্গালী)উপস্থিত ছিলেন।

শুনানীর শুরুতে উপজাতিদের বক্তব্য নেয়া হয়। তারা বলেন, অর্ধশত বছরের অধিক সময় ধরে ১ম শ্রেণি ভূমির খতিয়ান সূত্রে মালিক হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। তবে টিলা ভূমি (বসত) খাস দখল সূত্রে আবাদ (জুম চাষ) করত বলে দাবী করেন। অন্যদিকে বাঙ্গালী ১৯৮৩-৮৪ সনের কবুলিয়ত মূলে (শরনার্থী) সরকার কর্তৃক ভূমি বন্দোবস্তী পেয়ে বসবাস করছে তারা। কিন্তু ১৯৮৭-৮৮ সালে পার্বত্য চট্রগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে তৎকালীণ সময়ে সরকার বাঙ্গালীদেরকে গুচ্ছগ্রামে জমায়েত করার কারণে ওই সব বসত ভিটা পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

সম্প্রতি সময়ে সেখানে উপজাতিরা মন্দির নির্মাণের নামে এবং বাঙ্গালীরা সৃজিত ফল-ফলাদি রক্ষণা-বেক্ষণে গেলে উভয়ের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রশাসন শুনানীর উদ্যোগ গ্রহন করেন। শুনানীকালে উভয়ে উপস্থাপিত রেকর্ডপত্র যাচাই-বাচাইয়ে বৈধ মালিকদের মাঝে ভূমি বন্টন হলে কারো আপত্তি থাকবে না মর্মে একমত পোষণ করে সকলে এবং ওই সময় পর্যন্ত স্থিতবস্থা বহাল থাকবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কিন্তু ২ দিন যেতে না যেতে শুনানীতে মতামত পেশ করা এবং সিদ্ধান্তে ঐক্যমত পোষণকারী কার্বারীরা সমঝোতার দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে এসে অবরোধ আহ্বান করায় বিভ্রান্তি নেমে আসে জনমনে! নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক কার্বারী জানান, তৃণমূলে বসবাসকারী উপজাতিদেরকে কর্মসূচীতে আসতে বাধ্য করছে সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠনগুলো। অবরোধকে ঘিরে প্রশাসন অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করায় অবরোধ সমর্থনে কেউই মাঠে আসেনি। এদিকে অবরোধ চলাকালে অতিরিক্ত পুলিশের পাশা-পাশি ব্যাটালিয়ন আনসার ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার ছিল।

ওইদিন সকাল ১০টায় ওয়াকছড়ি এলাকায় পরিদর্শনে আসেন সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে.কর্ণেল রাব্বি আহসান পিএসসি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ.জব্বার, ইউএনও যুথিকা সরকার, রামগড় সার্কেল মো. ইউনুস মিয়া, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. দিদারুল আলম,ও.সি মো. শফিকুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন।

তারা ঘটনাস্থ উত্তর হাফছড়ির নির্জন অরণ্যে যান এবং পঙ্গু বাঙ্গালী আবদুস সালামের আংশিক পুড়ে যাওয়া খামারটি দেখেন। এ সময় উপস্থিত পাহাড়ী-বাঙ্গালীদেরকে সর্তক করে জোন অধিনায়ক লে.কর্ণেল রাব্বি আহসান বলেন, দুর্বৃত্তরা যে দলেরই হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না। পাহাড়ে সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে প্রথমে প্রতিবেশিদের মাঝে সম্প্রীতি গড়ে তোলতে হবে। সশস্ত্র কিংবা সুবিধাভোগী গোষ্ঠির ডাকে সাড়া রাস্তায় এসে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করা যাবে না। এতে নিজেদের মধ্যে মতপ্রার্থক্য, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বাড়বে। আঞ্চলিক রাজনীতির নামে সাধারণ মানুষকে অহেতুক ভূল বুঝিয়ে প্রশাসনের মুখোমুখি করাই সন্ত্রাসীদের কাজ। তাই সকলকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে মো. দিদারুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান, খামার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া স্থানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে আদৌ কোন মাদ্রাসা ছিল কিনা তা নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। ত থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজাতিদের পক্ষ অবলম্বন করে আঞ্চলিক সংগঠনগুলো প্রশাসনকে অবজ্ঞা করে অহেতুক শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। পুলিশ আইন-শৃংখলা রক্ষায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

এসকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে, গত ৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে ২ জন পাহাড়ী সন্ত্রাসী ইন্ধনদাতাকে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক আটক করা হয়। পরবর্তীতে মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ম্র্যাগ্য মারমা ও হাফছড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উশেপ্রু মারমার সম্মানার্থে এবং অনুরোধে পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা না করার শর্তে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ সমস্যা সমাধানে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পাহাড়ীরা বিশেষ করে ইউপিডিএফ/সন্ত্রাসী এতে কোন গ্রাহ্যই করছে না।

এদিকে সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষ মদদে এবং উদ্ধত কার্যক্রমে সিন্দুকছড়ি জোনের জোন কমান্ডার গত ৯ আগস্ট দুপুর ১২ টায় হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উসেপ্রু মারমা, মানিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম, পাতাছড়া ইউপি মেম্বার মানেন্দ্র চাকমা, মানিকছড়ির ১ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শিউলি বেগম ও জালিয়াপাড়ার প্রাক্তন মেম্বার আইয়ুব আলীর সাথে বকরীপাড়ার ভুমি বিরোধ সম্পর্কে বৈঠক করেন।  বৈঠকে তিনি পরিস্কারভাষায় সতর্কবাণী করেন, যেসকল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভুমি বিরোধে প্ররোচনা জোগাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইন্ধনদাতা ইউপিডিএফ এর এরিয়া কমান্ডার, সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদের যেকোন মুল্যে আটক করা হবে। প্রয়োজনে দীর্ঘ দিন ধরে সম্ভাব্য এলাকায় চিরুনী অভিযান পরিচালনা করা হবে। জোন কমান্ডার সতর্ক করে বলেন, আরেকটি তাইন্দং এবং বড়পিলাক এর মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রশাসন যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করবে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাহাড়ী অস্ত্রধারী দলের দলনেতা চিনু এবং দবন এলাকার সহজ সরল পাহাড়ীদের বাধ্য করছে ভুমি বিরোধ নিয়ে সমস্যা তৈরী সচল রাখতে। যদি কোন পাহাড়ী ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের কথা না মেনে এবং রাস্তায় না আসে তবে তাদের ৩০০ টাকা ও ১০ কেজি চাল জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। যখন প্রশাসন সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা সভায় অংশগ্রহনের আহ্বান করে তখন ইউপিডিএফ পাহাড়ীদের বাধা দেয়। এমনকি বাধা না শুনলে পাহাড়ীদের ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। তাই সাধারণ পাহাড়ীরাও সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন