মাদ্রাসার প্রশ্নে পিএসসি পরীক্ষা নেয়ার ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের অব্যাহতি
মানিকছড়ি প্রতিনিধি: মানিকছড়ি একটি কেন্দ্রে মাদ্রাসার প্রশ্ন দিয়ে পিএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনায় ওই কেন্দ্রের সচিব, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, হল সুপার ও পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও আপাতত বেঁচে গেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা শুভাশীষ বড়ুয়া!
গত ১৯ নভেম্বর প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষার প্রথমে দিনে অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষায় মানিকছড়ি উপজেলার ‘রাণী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’ কেন্দ্রের একটি কক্ষের ৩০ জন পিএসসি পরীক্ষার্থীকে ইবতেদায়ি প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এ সময় পরীক্ষার্থীরা প্রশ্ন কমন হয়নি মর্মে প্রতিবাদ করলেও পর্যবেক্ষকরা বিষয়টি আমলে না নিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন! পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে এসে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট স্কুল শিক্ষক ও অভিভাবকদের জানায়। এর পর হল সুপার বিষযটি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেন। কিন্তু ওই শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে পাস করিয়ে দেবেন মর্মে সান্তনা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন।
পরে এ বিষয়ে পার্বত্যনিউজসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের তলব করেন। এতে ওই কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাঁদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, ভূল ধরা পড়ার সাথে সাথে বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত নাম্বার দিয়ে পাস করিয়ে দেবেন বলে আশ্বস্ত করার কারণে এ বিষয়ে আর কাউকে অবহিত করা হয়নি।
এদিকে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আহ্সান উদদীন মুরাদ গত ২১ নভেম্বর বিকালে পিইসি ও ইবতেদায়ি ৬ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্র সচিব, সহকারী সচিব, সরকারি অফিসার, হল সুপার ও কক্ষের পর্যবেক্ষকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। এ সময় কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা ভুল স্বীকার করে পৃথক পৃথকভাবে লিখিত জবাব দেন। পরে রাতেই তিনি দায়িত্ব অবহেলার কারণে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্র সচিব, সহকারী সচিব, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, হল সুপার, সহকারী হল সুপারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং ওই কক্ষের দুজন পর্যবেক্ষককে পুরো পরীক্ষাকালীন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ঘোষণা করে চিঠি ইস্যু করেন।
কিন্তু অধীনস্থরা অব্যাহতি পেলেও শিক্ষা কর্মকর্তা শুভাশীষ বড়ুয়া আপাতত বেঁচে গেলেন। অব্যাহতি প্রাপ্ত একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, যেহেতু প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা তাই প্রশ্ন বিতরণে ভুলের বিষয়টি প্রথমে শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছিল। তিনি কেন বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে শিক্ষার্থীদের পাস করিয়ে দেবেন বলে ঘোষণা দিলেন। আজ শুধু আমাদেরই বিচার হলো। শিক্ষা কর্মকর্তাকেও বিচারের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি আমরা।
নতুন দায়িত্ব প্রাপ্তরা হলেন, কেন্দ্র সচিব দীলিপ কুমার দেব, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. আবদুল মন্নান পাটোয়ারী, হল সুপার শিখা রাণী হাওলাদার, সহকারী হল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন।