মাতামুহুরীতে বিষ প্রয়োগ: ধ্বংস হচ্ছে মাছের প্রজাতি

alikadam-motsha-shikar-news-pic-1-30-11-2016-copy

আলীকদম প্রতিনিধি:

বান্দরবানের পাহাড়ি নদী মাতামুহুরীতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার অব্যাহত রেখেছে একটি দুষ্টচক্র। বুধবার সকালে আলীকদম উপজেলা সদরের নয়াপাড়া এলাকায় মাতামুহুরী নদীতে রুই, বোয়াল, কাতলা ও চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভেসে উঠে। এ সময় স্থানীয়দের মশারি ও জাল নিয়ে মরা মাছ ধরতে দেখা যায়। প্রতিবছর মাতামুহুরী নদীতে বিষপ্রয়োগে মাছ শিকারের অভিযোগ উঠলেও কার্যত মৎস্য বিভাগ নিরব ভূমিকায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া আমাদের করার কিছু নেই। কাউকে ধরতে না পারলে আমরা কিভাবে ব্যবস্থা নেব’।

স্থানীয়রা জানান, নদীতে প্রতিবছর বিষপ্রয়োগের ফলে বড়-ছোট চিংড়ি ও নানা প্রজাতির মাছের রেনু মারা পড়ে। এতে মাতামুহুরী নদী মৎস্য শূন্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষ প্রয়োগের কারণে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মাছের খাবার নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মিঠা নদীর মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে মাতামুহুরী নদী লামা-আলীকদমে মাছের চাহিদা পূরণ করে আসছে। কিন্তু কতিপয় লোভী মাছ শিকারীদের লোভের কবলে পড়ে নির্বংশ হচ্ছে নানা প্রজাতির মাছ। এ কারণে স্থানীয় জেলেরাও পড়েছে সংকটে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সংবাদকর্মী হাসান মাহমুদ জানান, বিষপ্রয়োগে মাছ নিধনের পাশাপাশি হাড্ডি জেলেরা বিশেষ প্রকার রশির মাধ্যমে মাতামুহুরী নদীর পোনমাছ ধ্বংস করছে। এক্ষেত্রে মৎস্য অফিসের কোন তদারকি নেই। এছাড়াও নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে ক্ষতিকর তামাক চাষে অতিমাত্রায় কীটনাশক ও ইউরিয়া প্রয়োগ করে চাষীরা। এ কারণেও মাতামুহুরী নদীর মাছের বংশবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নদীর তীর সংরক্ষণে উপজেলা প্রশাসন কার্যত কোন পদক্ষেপ নেয় না।

উপজেলা মৎস্য বিভাগ মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবছর একই ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, স্থানীয় মৎস্য বিভাগ মাছ নিধনকারী সকল প্রকার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন