মাটিরাঙ্গা তাইন্দং গণহত্যার ৩০ বছর : দায়ীদের বিচার করতে হবে

matiranga

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :

আজ ২৯ এপ্রিল, মাটিরাঙ্গা গণহত্যা দিবস। ১৯৮৬ সালের এই দিনে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের  অর্ন্তগত আসালং, তানৈক্য পাড়া, তাইন্দং বাজার, নোয়া পাড়া গ্রামে এবং তবলছড়িসহ  পানছড়িতে ও দিঘীনালায় মোট ১১টি গ্রামে রাত ৯.১৫টায় একযোগে হামলা চালিয়ে ৪৯ জন নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসী বাহিনীর তথাকথিত শান্তিবাহিনী। মাটিরাঙ্গা গণহত্যার আজ ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেদিনের গণহত্যার শিকার প্রত্যেক শহিদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের পাশাপাশি এর সাথে জড়িত সকল সন্ত্রাসীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান আরও জানান, সেদিন শান্তিবাহিনী প্রথমে বিডিআর ক্যাম্পে গুলি করে যাতে বিডিআর সৈন্যরা প্রাণভয়ে ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে।কৌশলে বিডিআরদের ক্যাম্পে আটকে রেখে  তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সদস্যরা বাঙালিদের বাড়ি-ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়, ঘর থেকে বের হতে চাইলে গুলি করে আদমরা অবস্থায় ঘরের আগুনে ঠেলে দিয়ে পুরিয়ে হত্যা করে, যাকে যেখানে পেয়েছে গুলি করেছে, পুরুষ, মহিলা এমনকি শিশুরাও রেহায় পায়নি শান্তিবাহিনীর নরপশুদের আক্রমণ থেকে। হায়নাদের আক্রমণে এক রাতেই নিহত হয় ৪৯ জন নিরঅস্ত্র মানুষ। যে রাতের কথা মনে হলে আজও সেখানকার বাসিন্দরা ভয়ে শরীর শিউরে উঠে।

বিবৃতিতে তিনি আরও অভিযোগ করেন, সেদিন এত বড় ভয়ঙ্কর গণহত্যার ঘটনা ঘটল অথচ তার কোনো বিচার হলো না আজ পর্যন্ত। এমনকি নামে মাত্র ক্ষতিপূরূন সরূপ মাথাপিছু দেয়া হয়েছিল মাত্র ১০,০০০/-টাকা। যাদের হ্ত্যা করা হয়েছে, তাদের পরিবারকে এখনও যথাযত ক্ষতি পুরূণ দেয়া হয়নি । তাদের পরিবারকে এখনও নিরাপত্তাহীনতার কারণে গুচ্ছগ্রামে কার্যত বন্দি জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। সেখানে না আছে ঠিক মতো মাথা গুঁজার ঠাঁই, না আছে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা। সীমিত সরকারি রেশনের ওপর নির্ভর করে তাদের দিনাতিপাত করতে হচ্ছে আজও।

বিবৃতিতে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া  বলেন, আজ মাটিরাঙ্গা গণহত্যার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমাদের দাবি হলো, ২৯ এপ্রিল ১৯৮৬ সালে নিহত শহীদদের স্মরণে তাইন্দং-এ একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে সেখানে শহীদদের নামের তালিকা টানিয়ে তা সংরক্ষণ করা , প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং সরকার বাদী হয়ে এ ঘটনার দায়ীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দ্বারা তদন্ত করে তথাকথিত শান্তি বাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং নির্দেশদাতা হিসেবে সন্তু লার্মার ফাঁসী দেয়া হোক। সেনা ক্যাম্প ‍বৃদ্ধি করা ,অস্রউদ্ধার অভিযান পরিচালনা করাসহ পার্বত্য নাগরিক পরিষদের ৮ দফা দাবী মেনে নেয়ার  আহবান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার শান্তি চুক্তি করলেও পাহাড়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠা হয়নি। চুক্তির পরও সকল রাস্তাঘাট সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দখলে। প্রশাসনকে বারবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ত্রাসীদের ভয়ে জমিজমা ভিটামাটি হারিয়ে এখনও অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।তাই অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের আস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি বন্ধ করে উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলোর পুর্ণবাসনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন