মাটিরাঙ্গায় পিইসি পরীক্ষায় অনিয়ম: কেন্দ্র সচিবকে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা :

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় চলতি বছরের পিইসি (প্রাথমিক শিক্ষা সনদ) পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে শান্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. রবিউল আলমকে চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে তিন বছরের জন্য অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার(২০ নভেম্বর) মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

জানা গেছে, চলতি সমাপনী পরীক্ষায় শান্তিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিভিন্ন অনিয়ম ও নীতি বহির্ভুত কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ করেন সহকারী হল সুপার ও বলিচন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সোবহান। একই সাথে কেন্দ্রটিতে কেন্দ্রের বাহির থেকে উত্তরপত্র লিখে আনা হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।

পরিদর্শকালে পরীক্ষা কেন্দ্রের বিবিধ বিষয় পরীক্ষা-নীরিক্ষা কালে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রেরিত ১হাজার ১শ ১৮টি খাতার মধ্যে তিনদিনের পরীক্ষা শেষে ৬শ ৩৩টি অব্যবহৃত উত্তরপত্র থাকার কথা থাকলেও ১৫টি উত্তরপত্র পাওয়া যায়নি। তবে ১৫টি উত্তরপত্র না থাকার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কেন্দ্র সচিব মো. রবিউল আলম।

এ সময় মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণলাল দেবনাথ এবং কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মোহাম্মদ মোহতাসিম বিল্লাহ তার সাথে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অব্যাহতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. রবিউল আলম বাহির থেকে উত্তরপত্র লিখে আনার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভুলবশত: লুসশীটের সাথে অব্যবহৃত ১৫টি উত্তরপত্র ছিল। তাই গণনার সময় পাওয়া যায়নি। তবে এর পর পরই লুসশীটের সাথে উত্তরপত্রগুলো পাওয়া যায় এবং তাৎক্ষনিকভাবে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে অবহিত করি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কৃষ্ণলাল দেবনাথ বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে চলতি বছরের পরীক্ষাসহ পরবর্তী তিন বছরের জন্য অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে ওই কেন্দ্রের হল সুপার ও নতুনপাড়া (পশ্চিম) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগেও গোমতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাকালে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনরে কাঠ ও টিন বিক্রির সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে আটক করে। পরে নানা দেন দরবারের পর ‘পারস্পারিক বদলী’র মাধ্যমে চলতি বছরের শুরুতে শান্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হয়ে আসেন মো. রবিউল আলম।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন