মাটিরাঙ্গায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সেনাবাহিনী-বিজিবি

khagrachari-news-pic-08

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পাহাড়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনী বরাবরই পাহাড়ের নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে তাদের জনহিতকর কাজের মাধ্যমে পাহাড়ী-বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাধারণ মানুষের আপনজনে পরিণত হয়েছে। আর সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবিও সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে নিবেদিত থেকেছে বছরের পর বছর ধরে। মাটিরাঙ্গার খেদাছড়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনী-বিজিবি আবারো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।

রোববার সারাদিনের ব্যাবসা শেষে ব্যবসায়ীরা যখন যে যার মতো বাড়িতে ফিরে গেছেন তখন রাতের শেষ দিকে সোমবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে খেদাছড়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এতে ভস্মিভুত হয় একটি কুলিং কর্ণার, দুটি মুদি দোকান ও একটি ফার্নিসার দোকানসহ দশটি দোকান। এসময় ব্যবসায়ীদের দুটি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণরূপে ভস্মিভুত হয়। এতে অন্তত ত্রিশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সংগঠিত অগ্নিকান্ডে আগুনের লেলিহান শিখা চার দিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই বাজারের খুব কাছে থাকা ৪০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি‘র জওয়ানরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পানি স্বল্পতার মধ্যেই তারা নিজেদের জীবনবাজি রেখে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এসময় দোকানের ভিতরে ঘুমন্ত থাকা মো. আবদুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে বের করে আনে বিজিবির জওয়ানরা।

এ বিষয়ে খেদাছড়া বাজারের ব্যবসায়ী ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিজিবি সদস্যরা না এলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো না। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারতো। তিনি বলেন, বিজিবির সাহসী ভুমিকার কারণেই বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা থেকে বেঁচে গেছে খেদাছড়া বাজার।

এদিকে আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যবসায়ী মো. আবদুর রহমান বলেন, যথাসময়ে বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে না এলে আমি হয়তো দিনের আলো দেখতে পেতাম না। বিজিবির সাহসিকতায় তিনি নতুন জীবন পেয়েছেন বলেও এ প্রতিনিধিকে জানান।

এদিকে অগ্নিকান্ডের বিষয়টি জানার পরপরই ভোর ছ‘টার দিকে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুজ্জামান অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ খেদাছড়া বাজার পরিদর্শনে ছুটে যান। এসময় তিনি অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সান্ত্বনা দেন। তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সকলকে ধৈর্য্য ধারণেরও আহবান জানান। এসময় তিনি নিজেদের জীবনবাজি রেখে সাহসিকতার সাথে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা থেকে খেদাছড়া বাজারকে রক্ষা করার জন্য বিজিবি জওয়ানদেরও ধন্যবাদ দেন। এসময় পলাশপুর জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. এনামুল করিমসহ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা তার সাথে ছিলেন।

এদিকে সোমবার সকাল ১০টার দিকে দ্বিতীয় দফায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ খেদাছড়া বাজারে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাবসায়ীদের রিজিয়ন ও পলাশপুর জোনের পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক অনুদান ও খাদ্যশষ্য প্রদান করেন। এসময় তিনি বলেন, সেনাবাহিনী-বিজিবি এলকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি মানবিক দায়িত্ব থেকেই নিজেদের স্বামর্থ্য অনুযায়ী এখানকার ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। যা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।

এসময় পলাশপুর জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. এনামুল করিম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বি.এম মশিউর রহমান, মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সাহাদাত হোসেন টিটো, বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান মো. রহমত উল্যাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন