মাটিরাঙ্গার জলপাহাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের উপচেপড়া ভীড়

mati 1

মুজিবুর রহমান ভুইয়া:
পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে ঘিরে মাটিরাঙ্গায় বিনোদন প্রেমীদের উপচেপড়া ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিনোদনমুলক পার্ক ‘জলপাহাড়’। প্রতিকুল আবহাওয়া শেষে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে মানুষ যে যার মতো ছুটে আসে মাটিরাঙ্গা উপজেলার বুকে অবস্থিত ঘরের কাছেই একমাত্র বিনোদন পার্ক জলপাহাড়ে। বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে জলপাহাড়।

ঈদের ব্যস্ততা শেষে শুক্রবার বিকাল থেকেই নানা বয়সী মানুষের ঢল নামে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের বুকে পাহাড় আর জলের সমন্বয়ে গড়া জলপাহাড়ে। পড়ন্ত বিকেলে লোকে লোকরণ্য হয়ে ওঠে জলপাহাড়। শিশুদের সঙ্গে বড়রাও যেন আনন্দে একাকার হয়ে গেছে।

জলপাহাড়ের নতুন সংযোজন নাগরদোলা আর পুতুল নাচ বিনোদনপ্রেমীদের মধ্যে নতুন আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন রাইডগুলোতে দেখা গেছে বিনোদনপ্রেমীদের উপচেপড়া ভীড়। বিভিন্ন পেশায় ব্যস্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে বাঁধভাঙা আনন্দে মেতেছে এখানকার শিশু-কিশোররা। ছোটদের আনন্দ যেন ছুঁয়েছে বড়দেরও।

পাহাড়ীদের ঝুম ঘরের আদলে তৈরী দু’টি ঘরেই লক্ষ্য করা গেছে বিনোদনকেন্দ্রে আসা লোকদের পারিবারিক আড্ডা। বিকেলের আধো আলো-আধাঁরে জলপাহাড়ের পাকা সিঁড়িতে ছিল কিশোর-কিশোরীদের জম্পেস আড্ডা। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও একটু বিনোদনের আশায় ছুটে আসা মানুষগুলোকে যেন ঘরে ফিরতে দিচ্ছেনা জলপাহাড়ের ভালোবাসা।

জলপাহাড়ের বুকে ছোট্ট লেকে একমাত্র ময়ুরপঙ্খী নৌকা যেন বিনোদনপ্রেমীদের বাড়তি আনন্দের বড় জায়গা। কেউ মা-বাবার হাত ধরে আর কেউ কেউ প্রিয়জনের হাত ধরে ময়ুরপঙ্খী নৌকায় চড়ে বেড়িয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা। তবে ময়ুরপঙ্খী নৌকার সংখ্যা না বাড়ানোর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
mati 2
চট্টগ্রাম থেকে আত্মীয়ের বাড়িতে ঈদের ছুটিতে বেড়াতে আসা আহসানুল কবীরের মতে মাটিরাঙ্গায় মতো ছোট্ট শহরে এবার ঈদ করে মনে হয়েছে শহরেই ঈদ উদযাপন করলাম। ঈদের দিন বিকালে স্ব-পরিবারে জলপাহাড়ে এসেছেন বিনোদনের খোঁজে। তিনি জলপাহাড়ে বিনোদনের আরো সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবী করেন। তিনি ঘরের কাছে বিনোদনের এতো বড় সুযোগকে মাটিরাঙ্গাবাসীর জন্য অনেক বড় পাওয়া বলেও দাবী করেন।

জলপাহাড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা অনেকেই বিনোদনের পরিধি বাড়ানোর আশা করে বলেন, আমরা নাড়ীর টানে বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে এখানে ছুটে এলও বিনোদনের কোন সুযোগ ছিলনা। তবে জলপাহাড় আমাদের ব্যস্ত সময়ে বিনোদন লাভের সুযোগ করে দিয়েছে। তারা এজন্য জলপাহাড়ের স্বপ্নদ্রষ্টা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকাউলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জলপাহাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের উপচেপড়া ভীর তার নিজের চোখেই দেখা দরকার ছিল।

বিনোদনমূলক পার্ক জলপাহাড়ের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ জলপাহাড়কে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পটে পরিণত করা হলে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি মাটিরাঙ্গার মানুষ বিনোদনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটে যেতে হবেনা বলেও মনে করেন এখানকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

এদিকে জলপাহাড়ের ইজারাদার দীলিপ সাহা বলেন, বিনোদনপ্রেমীদের উপচেপড়া ভীড় মাটিরাঙ্গায় বিনোদন কেন্দ্রের প্রয়োজনীতার কথা জানান দিয়েছে। তিনি জলপাহাড় বিনোদনের এক বড় ক্ষেত্র তৈরী করেছে উল্লেখ করে এজন্য বড় ধরনের বাড়ানোর আশা প্রকাশ করে জলপাহাড়ের স্বপ্নদ্রষ্টা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকাউলকে স্মরণ করে বলেন, তিনি উপলব্ধি করেছেন বলেই আজ এখনাকার মানুষ বিনোদন খুজে পেয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন