মহেশখালী, কুতুবদিয়ার স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে আরো ৫২০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
মহেশখালী প্রতিনিধি:
মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে কাজ করছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। চলমান প্রকল্প ছাড়াও প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপকূলের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জোরালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
গতকাল(বৃহস্পতিবার) বিকাল ৩টায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি’র সাথে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক’র এক বৈঠকে এ কথা বলেন পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি। এ ছাড়াও আগামী ৭ ডিসেম্বর ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করতে মহেশখালী-কুতুবদিয়া সফর করবেন মন্ত্রী।
ঢাকায় পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি’র সাথে বৈঠক করেছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু এমপি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম চৌধুরী ও কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম। গতকাল(বৃহস্পতিবার) বিকাল ৩টায় পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে আশেক উল্লাহ রফিক এমপি জানান, মহেশখালী-কুতুবদিয়ার পুরো বেড়িবাঁধ যাতে স্থায়ীভাবে নির্মিত হয় এ বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে এই উপকূলীয় এলাকার ৫ লাখ মানুষের দুর্দশার কথা মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয় যা উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে পানি সম্পদমন্ত্রী সম্মতি দেওয়ায় মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, যেভাবেই হউক উপকূলীয় এলাকায় আর জোয়ার-ভাটা দেখতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ এলাকার উন্নয়নে দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। আমরা চাই মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মিত হউক। পানি সম্পদমন্ত্রী আগামী ৭ ডিসেম্বর মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় চলমান বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
কক্সবাজার পানি প্রধান নির্বাহী সবিবুর রহমান জানিয়েছেন মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ইতোমধ্যে ১৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ২৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। যা বাস্তবায়ন করছে নৌ-বাহিনী। এ ছাড়া আরো ৪০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ৬৯,৭০ ও ৭১নং পোল্ডার এর আওতায় বেড়িবাঁধের আরো কাজ করার জন্য ৫২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এতে ৪৫০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে ধলঘাটা ও মাতারবাড়ির বেড়িবাঁধের জন্য এবং ৭০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে কুতুবদিয়ার বেড়িবাধের জন্য। এটি বাস্তবায়িত হলে পুরো মহেশখালী-কুতুবদিয়ার মানুষের আর দূর্ভোগ পোহাতে হবে না।
মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, চলমান ও প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আর সমস্যা থাকবে না। আশেক উল্লাহ রফিক এমপি’র অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এ সব প্রকল্প। চলমান প্রকল্প ছাড়া প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য দ্রুত অর্থ ছাড় দিলে এলাকাবাসী উপকৃত হবে।
কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের চেয়ারম্যান নুরুচ্ছফা বিকম জানিয়েছেন, বিগত সময়ে যারা এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তারা বেড়িবাঁধের জন্য কোন কাজ না করায় আমাদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষকে এরা চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। বর্তমান সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক’র নেতৃত্বে বেড়িবাঁধের জন্য যা কাজ হয়েছে তা গত ৩০ বছরেও হয়নি। আমরা চাই কাজের দ্রুত বাস্তবায়ন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় গত বর্ষা মৌসুমে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ৭টি ইউনিয়ন জোয়ার-ভাটায় পরিণত হয়। জরুরী বরাদ্দ হিসাবে যা করা হয় এতে ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় মানুষের দূর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। যার ফলে নৌ-বাহিনীর তত্বাবধানেই নির্মিত হচ্ছে সাড়ে ২৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।