মহেশখালীর মাতারবাড়ির অরক্ষিত বেড়িবাঁধ, বাড়ি ঘর ও ফসলি জমি পানির নিচে 

মহেশখালী প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি বিভিন্ন সময় জোয়ারের পানির ধাক্কায় তলিয়ে গেছে ৭০নং পোল্ডারের সাইটপাড়া ও উত্তর রাজঘাট এলাকার বেড়িবাধ। বেড়িবাধ সংস্কার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নড়বড়ে কাজ করায় চলতি বছরে সংস্কার কাজের ৩ মাসের মাথায় মাতারবাড়ির সাইটপাড়ার তিন কিলোমিটার বালির বেড়িবাঁধের আঁধা কিলোমিটারই ধসে যায়।

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ পার্বত্যনিউজকে  বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও এখনো বেড়িবাঁধ নির্মাণে কোন লক্ষ্য দেখা যাচ্ছেনা এখন বিষয়টি উপ-দ্বীপের ৭০ হাজার মানুষের অস্তিত্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন তারা আমাদের দুঃখ কষ্ট বুঝতে পারছেনা বুঝতে পারছিনা। চলতি বছরে স্থায়ি বেড়িবাধ ও সুইচ গেইট নির্মাণ না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে মাতারবাড়ি সাগরে পানিতে তলিয়ে যাবে। তিনি এব্যাপারে আশেক উল্লাহ রফিক এমপিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সংশ্লিষ্ট কর্মতাদের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

জানা গেছে, বেড়িবাঁধের বড় অংশ ধসে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে মাতারবাড়ির ৭০ হাজার বাসিন্দার। বেড়িবাঁধের উত্তর রাজঘাট ও সাইটপাড়া এলাকার বাকি অংশও যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানিয়দের। তেমনটা হলে পুরো ইউনিয়ন সাগরের পানিতে তলিয়ে যাবে বলেও মনে করেন পরিবেশ বিশেজ্ঞরা।

বলতে গেলে নিয়তির সাথে যুদ্ধে চলছে মাতারবাড়ির ৭০ হাজার মানুষের। মাতারবাড়ি ইউনিয়নের ৭০নং পোল্ডারের অধিকাংশ ভাঙ্গা উত্তর রাজঘাট ও সাইটপাড়া প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা অংশ এখনো বন্ধ করা না হওয়ায় ঢুকছে জোয়ারের পানি। সিঙ্গাপুরের স্বপ্ন দেখা এ মানুষ গুলো এখন ঘুমের ঘোরে লাফিয়ে উঠে জোয়ারের পানিতে বসত বাড়ি ডুবে যাওয়ার আতঙ্কে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙা বেড়িবাঁধের কারণে জলাবদ্ধতায় সাইটপাড়া, হংস মিয়াজী পাড়া, উত্তর রাজঘাট, সিকদারপাড়াসহ প্রায় ১০ গ্রামের শত শত বাড়ি ঘর এখনো পানির নিচে। পানিতে সয়লাব হওয়ায় শত শত একর ফসলি জমির চাষ হয়নি। ক্ষতির পরিমান কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

পুরাতন সুইচ গেইট অধিক গ্রহণকৃত কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কেন্দ্রে এরিয়ায় ঢুকে যাওয়ায় পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হওয়াতে জলবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে চলতি বছরে নতুন সুইচ গেইটসহ ভাঙা বেঁড়িবাধ পুর্ণ নিমাণ না করলে জলবদ্ধাতাব্যাপক আকার ধারণ করে পুরো মাতারবাড়ি সাগরের পানিতে ডুবে যাবে বলে জানিযেছেন অত্র এলাকার সাইটপাড়ার বাসিন্দা আলমাস বেগম (৫৫)।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, নতুন করে বালির বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসী অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে আমি শুনেছি।

তাই বাঁধটি রক্ষার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলীকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন