মহেশখালীর ঐতিহাসিক আদিনাথ মেলা শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
ঐতিহাসিক পৌরাণিক কাহিনী মতে ষোড়শ শতাব্দিতে নির্মিত উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের তীর্থ মহেশখালীর মৈনাক পর্বতের চূড়ায় অবস্থিত শ্রী শ্রী আদিনাথ মন্দিরে শিব চতুর্দশী পুজা ও মেলা ২৪ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চর্তুদশীতে দেবাদি দেব শিবের আর্শীবাদ লাভের আশায় হিন্দু বৌদ্ধ তথা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শিব দর্শন পুজা করে থাকে। এ বছর শিব চতুর্দশী পুজার মূল দর্শনের লগ্ন নির্ধারিত হয়েছে আজ ২৪ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাত ৯টায় লগ্ন শুরু হয়ে পর দিন অর্থাৎ ২৫ ফেব্রুয়ারী শনিবার রাত ৯টায় শেষ হবে। তবে মূল পর্বের পরেও ৩ দিনব্যাপী পুজা ও দর্শন উৎসব চলবে।
আদিনাথ মন্দির সংস্কার কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রনব কুমার দে সূত্রে এতথ্য জানা গেছে। শিব চর্তুদশী পুজা উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও মৈনাক পর্বতের পাদ দেশে আগামী ৭দিনের জন্য বসেছে গ্রামীণ লোকজ মেলা। এ মেলা বিগত আনুমানিক দু’শ বছরেরও পূর্ব থেকে আদিনাথ মেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতি বছর শিব চর্তুদর্শী পুজা ও মেলা উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলংকা থেকে হাজার হাজার পুজারী ও ভক্তবৃন্দসহ লক্ষ পুজারীর সমাগম ঘটে।
শ্রী শ্রী আদিনাথ মেলা সুপারভাইজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, আদিনাথ মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শান্তি লাল নন্দীকে সাধারণ সম্পাদক, সহকারী কমিশনার (ভ’মি) বিভিষন কান্তি দাশকে মেলা সুপার, মহেশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ প্রদীপ কুমার দাশ কে প্রধান সমন্বয়ক ও যিশু চৌং-কে অর্থ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট মেলা সুপারভাইজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুপারভাইজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তি লাল নন্দী জানান, আদিনাথ মেলায় এ বছর যাত্রা সার্কাস হাউজীসহ কোন ধরনের জুয়া ও বিনোদনমূলক ব্যবস্থা থাকবে না। মেলায় পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকবে। এ পুলিশের টহল টিম থাকবে। উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত মতে এ মেলা চলবে ৭ দিনব্যাপী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, র্তীথ যাত্রীদের যাতায়তের সুবিধার্থে নৌ-যান ও সড়ক পথে যানবাহন ভাড়া নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি সভায় আলোচনা করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। এ মেলায় ইতিমধ্যে প্রায় দুই শতাধিক দোকান ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ ঘটতে পারে এ মেলায়। এদিকে গতকাল ২৩ ফেব্রুয়ারী বিকাল থেকে দেশ-বিদেশের পুজারীরা আসতে শুরু করেছেন। ধীরে ধীরে মেলা অঙ্গন উৎসবে রূপ নিতে শুরু করেছে।