Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

মহেশখালীতে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে বিমান বাহিনীর ৫০ সদস্যের প্রতিনিধিদল

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

মহেশখালীতে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন বিমান বাহিনীর ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। বৃহস্পতিবার(২৮ডিসেম্বর) সকাল থেকে তারা পৃথকভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। ওই প্রতিনিধিদলকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের একটি দল।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ সাফায়েত হোসেন জানান, ‘আজ সকাল থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্কোয়াডন লিডার মেজর নাজমুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। এরা বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ যেখানে পড়েছে সব জায়গায় পরিদর্শন করেছেন এবং উদ্ধার অভিযান চানাচ্ছেন। একই সাথে বিমান বাহিনীর এই প্রতিনিধিদলকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মরত সদস্যরা।

উদ্ধার অভিযান প্রতিনিধিদলের সাথে থাকা মহেশখালী পৌর সভার সাবেক সরওয়ার আজম বলেন, ‘সকাল থেকে বিমান বাহিনীর অফিসাররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে নামেন। উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষ মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আনা হচ্ছে। সেখান থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, যেখানে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, সেখান থেকে আরও প্রায় এক কিলোমিটার আগে আকাশ থেকেই বিমানের কিছু অংশ খসে পড়ে। অনেকে বলছেন, আকাশে আগুনের ফুলকি দেখে প্রথমে আতশবাজি মনে করলেও পরে জানতে পারেন, এর উৎস বিমান দুর্ঘটনা।

বিধ্বস্ত একটি বিমানের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কিছু অংশবিধ্বস্ত বিমানের অংশ আবু কায়ছার নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগে এর একটি অংশ ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে লম্বাঘোনা বাজারের কাছে খসে পড়ে। তারা ভাঙা অংশ ঠিকমতো দেখার আগেই বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার শব্দ পান।

বিধ্বস্ত একটি প্রশিক্ষণ বিমান মহেশখালীর গোরকঘাটা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘সন্ধ্যার পরই আমরা বিকট একটি শব্দ শুনতে পাই। এর পরপরই পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান সরওয়ার আজমের বাড়ির পেছনে খালি জায়গায় আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায়। আগুন দেখে ও শব্দ শুনে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেখানে ভিড় করেন। ফায়ার সার্ভিসের মহেশখালী ইউনিটের সদস্যরাও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন।’

বিমান ভেঙে যাওয়া অংশ প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ‘একটি বিমান ওই এলাকার জনৈক আব্দুস সাত্তারের বাড়ির ওপরের অংশ উড়িয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে বিধ্বস্ত হয়। ওই সময় আঁখি (১৫) নামে এক কিশোরী আহত হয়েছে। বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।’

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের একটি অংশবিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমানের চিত্র মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরাঘোনা এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মহেশখালী থেকে কক্সবাজার ফিরছিলাম। পথে ঘোরকঘাটা এলাকায় এসে দেখি, আকাশে আলোকছটা। প্রথমে মনে করছিলাম হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আতশবাজি। কিন্তু পরে জানতে পারি, সংঘর্ষে দু’টি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।’

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানে একজন পাইলট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা এলাকায় বসবাসরত শাহ আলম বলেন, ‘মাগরিবের আজানের পরপর মহেশখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে আমরা রিকশায় করে যাচ্ছিলাম। সাড়ে ৬টার দিকে দু’টি বিকট আওয়াজ শুনতে পাই। তখন দেখলাম, আকাশে আগুনের দু’টি গোলা। এর একটি পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে, আর অন্যটি দেখলাম ছোট মহেশখালী ইউনিয়নে মাইজপাড়ায় পড়ছে।’

বিধ্বস্ত হয় প্রশিক্ষণ বিমান একই কথা বলছেন বৃদ্ধা মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়াও। তিনি বলেন, ‘আমরা দোকানে বসে গল্প করছিলাম। এসময় হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয় এবং আকাশে আলোর ঝলকানি দেখি। এতে আমরা ভয় পেয়ে যাই। পরে মানুষের জটলা ও আর্তচিৎকারে আমরা এগিয়ে যাই।’

বিধ্বস্ত বিমানে জ্বলছে আগুন এদিকে, দুর্ঘটনার পরপরই দুই বিমানে থাকা চার জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে তিন জনকে চট্টগ্রামে সামরিক হাসপাতাল ও আরেকজনকে রামুতে সেনাবাহিনীর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, বিধ্বস্ত বিমান দু’টির একটিতে ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শরীফ ও স্কোয়াড্রন লিডার মনির। অন্যটিতে ছিলেন উইং কমান্ডার আজিম ও রাজীব। চার পাইলট বুধবার সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিটে প্রশিক্ষণ বিমান দু’টি নিয়ে উড্ডয়ন করেন। ৫০ মিনিট পর কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।

আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক (বিমান বাহিনী ডেস্ক) মো. নূর ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দুটি (ণঅক-১৩০) বিমান সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম থেকে উড্ডয়ন করে। পৌনে ৭টার দিকে আমরা খবর পেয়েছি বিধ্বস্তের ঘটনা। দু’টি বিমানে চারজন ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় বিমান দুটি রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে ৪জন পাইলটকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইএসপিআর।

উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মহেশখালী পৌরসভার দক্ষিণ পুটিবিলার বসতবাড়ির ওপর একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। অপরটি বিধ্বস্থ হয় ছোটমহেশখালীর মাইঝপাড়া গ্রামের পানের বরজের উপর। এ ঘটনায় ৪ পাইলটকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে। এদিকে, বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড় জমছে। ধ্বংসস্তুপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন