মহালছড়ি উপজেলায় আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস জ্বর, হাসপাতালে প্রচণ্ড ভীড়

মহালছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস জ্বর। উপজেলার সর্বত্র প্রায় প্রতিটি পরিবারে দুই থেকে তিনজন আবার কোন কোন পরিবারে সবাই এ জ্বরে আক্রান্ত।

সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানকালে মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (হাসপাতাল) সূত্রে জানা যায়, ভাইরাসে আক্রান্ত এই জ্বরের বেশী শিকার হচ্ছে মহিলা এবং শিশুরা।

মহালছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় আগত ৫০/৬০ জন রোগী সবাই জ্বরে আক্রান্ত। প্রত্যেকের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায় ( ডাক্তারের ভাষ্যমতে) সবাই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত।

সরজমিনে আরো দেখা যায় হাসপাতালের বেডের প্রত্যেক রোগীকে স্যালাইন দেওয়া আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও অভিজ্ঞ ডাক্তার তনয় তালুকদার পার্বত্যনিউজকে জানান, ৩/৪  জন রোগী টাইফয়েড রোগের রোগী, বাকি সবাই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত।

এসব রোগীর জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন ও সেফুরক্সিম ট্যাবলেটই যথেষ্ট এবং এতেই রোগী সেরে উঠছে।

তবে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সেফুরক্সিম ও হিস্টাসিন ট্যাবল হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছেনা। ফলে বাধ্য হয়ে উচ্চমূল্যে এগুলি বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট কাম ওষুধের স্টোর কিপার মো. আছমাউল হোসেনের কাছে সেফুরক্সিম ও হিস্টাসিন ট্যাবলেটের সরবরাহের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি পার্বত্যনিউজকে বলেন,  নির্ধারিত তারিখ ছাড়া স্টোর হতে ওষুধ বের করা হয় না।

এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসক প্রতিটি রোগীকে এ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট প্রেসক্রাইব করলেও রহস্যজনক কারণে হাসপাতাল থেকে তা সরবরাহ করা হচ্ছে না।

ফলে নিরুপায় হয়ে ২৫-৩৫ টাকা দামে প্রতিটি এ্যন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। হাসপাতালের ডা. তনয় তালুকদার ও মৃদুল ত্রিপুরা ছাড়া আর কোন ডাক্তার না থাকায় উল্লেখিত দু’জন ডাক্তারকে রোগী নিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

এক্ষেত্রে অন্যান্য ডাক্তারদের অনুপস্থিতির কারণ জানা যায়নি। তবে উক্ত দুই ডাক্তার জানান, পরিস্থিতি তারা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের সাধ্যমত প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

এলাকার সচেতনমহল মনে করেন এহেন পরিস্থিতির সামাল দিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও জরুরী প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ মহামারি আকার ধারণ করা থেকে রোধ করতে হবে। নইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে এটাই প্রত্যাশা করেন এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন