মহালছড়িতে মৎস্য প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মহালছড়ি প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মনাটেক যাদুগানালা মৎস্যচাষ বহুমূখী সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি বিপ্লো চাকমা সরকার অনুমোদিত মৎস্য বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প সমিতির নিকট বিক্রয় দেখিয়ে বিক্রিত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মনাটেক যাদুগানালা মৎস্যচাষ বহুমূখী সমবায় সমিতি লি: এর সদস্যদের যৌথ স্বাক্ষরিত মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর বরাবরে লিখিত এক অভিযোগ পত্রে বলা হয়, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সমিতির কর্ম এলাকাধীন নার্সারী পুকুরের বাধঁটিতে সভাপতির নামে “মনাটেক যাদুগানালা বিপ্লো চাকমা মৎস্য বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প” নামে একনেক থেকে সরকারি প্রকল্প অনুমোদন লাভ করে। কিন্তু সমিতির বর্তমান সভাপতি তথ্য গোপন করে মাসিক সভায় প্রকল্পটির স্থান অন্য জায়গায় বলে সভাকে অবহিত করেন এবং মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রকল্পটি সমিতির নিকট বিক্রয় দেখিয়ে সমিতির তহবিল হতে নগদ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাত করেন, যা বার্ষিক সাধারণ সভায় হিসাব বিবরণীতে পুকুরের বাঁধ উন্নয়ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া অভিযোগ পত্রে আরো বলা হয়, প্রকল্পটির প্রকল্প ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য ও সুকৌশলে গোপন রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নেও যথেষ্ট অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রকল্প নির্ধারিত স্থানটিতে ২০০৭-০৮ অর্থ বছরেও উপজেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। এছাড়াও গত ২০১৫ সালে সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে এ বাঁধটির উল্লেখযোগ্য সংস্কার করা হয়। সুতরাং প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নামাস্তর মাত্র। সরকারী প্রকল্প বিক্রি করে সমিতির টাকা আত্মসাত করা ও প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের বিষয়টি অধিকতর তদন্ত ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভুবন প্রীতি চাকমা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সমিতির সভাপতি মাসিক সভায় তাঁর নামে সরকারীভাবে একটি মৎস্য বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে বলে জানিয়ে তা সমিতির নিকট বিক্রয়ের প্রস্তাব করেন এবং সমিতির নিকট তিনি ৮০ হাজার টাকা দাবী করলে ৬০ হাজার টাকায় সমিতি প্রকল্পটি ক্রয় করে বলে জানান।

অভিযোগ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সমিতির সভাপতি বিপ্লো চাকমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজী হননি এবং আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে সাফ জানিয়ে দেন।

এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ শহীদ বিন এরশাদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অতি শীঘ্রই সমিতির সদস্যদের সাথে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে যদি কোন সমাধান না হয় তাহলে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইলিয়াছ মিয়া’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ পত্র হাতে পেয়েছেন স্বীকার করে বলেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলঅ ভূমি অফিসের কানুনগোকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব প্রদান করার কথা জানান। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন