মগনামার কাকঁপাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু না করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেলের কূলবর্তি মগনামা ইউনিয়নের পাউবো নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধের কাকঁপাড়া পয়েন্টে গত ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে বিলীন হওয়া ৪০ চেইন বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় আগামী বর্ষা মৌসুমে সাগরের পানিতে আবারো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে মগনামাবাসী। ফলে চরম আতঙ্কে রয়েছে এলাকার সাধারণ জনগণ। তারা তাদের বসতবাড়ি, জিনিসপত্র পুনরায় ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে চিন্তা করছে। এ বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে কাকঁপাড়ার একটি আশ্রয় কেন্দ্র ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন।

গত বর্ষা মৌসুমেও কাকপাড়ায় বিলীন পাউবোর ওই বেড়িবাঁধের অংশ দিয়ে সাগরের জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মগনামার ইউনিয়নের শত শত ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে আবারো সাগরের পানিতে ভাসতে হবে মগনামাবাসীকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, ঠিকাদারের অবহেলার কারণে কাকপাড়ার ওই বেড়িবাঁধ সংস্কার হচ্ছেনা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিগত বর্ষা মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে মগনামার পশ্চিমাংশে পুরো বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাঁকপাড়া অংশে। সরকারি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় মগনামার কাঁকপাড়া অংশ পরিদর্শন করেছিল। পরে মোস্তাফা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাকপাড়ার বিধ্বস্ত অংশ সংস্কারের জন্য পাউবোর পক্ষ থেকে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ঠিকাদারের অবহেলার কারণে কার্যাদেশ পাওয়ার ১ বছর পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এখনো কাজ শুরু করেনি। যার ব্যয় প্রায় ৭ কোটি টাকা। এ নিয়ে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহেদুল্লাহ ও জায়েদুল হক বলেন, ওই এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দুই বছর সময় বেঁধে দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি)। তাই স্থায়ী বেড়িবাঁধ ঠেকসইভাবে নির্মাণ করতে সময় নিয়ে কাজ করতে হবে তাদের। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বেড়িবাঁধের ওই অংশের কাজ সম্পন্ন না করলে আবারো প্লাবিত হবে মগনামা।

মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানান, কাকঁপাড়া এলাকার বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। সামনের বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গা ওই বেড়িবাঁধ পয়েন্ট দিয়ে আবারো সাগরের পানি প্রবেশ করে পুরো মগনামাই প্লাবিত হবে। এতে এই এলাকার একমাত্র ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়ন কেন্দ্র ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের অসংখ্য বসতঘর সাগরগর্ভে চলে যেতেও পারে। তিনি বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মগনামা ইউনিয়নের কাকপাড়া অংশের বিধ্বস্থ বেড়িবাঁধ পয়েন্টে বাঁধ আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই শেষ করা হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহাবুব উল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে আমি পাউবোর  ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তাগাদা দিয়েছি বর্ষা মৌসুমের আগেই বেড়িবাধঁ সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার জন্য। এমনকি কক্সবাজারে মিটিং এ কাঁকপাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে না কেন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। পাউবোর কর্মকর্তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন বর্ষা মৌসুমের আগে কাজটি শেষ করবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন