ভাষার জন্য বাঙ্গালীরা জীবন দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: মো. রাশেদুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা :
শহিদ দিবসের চেতনাকে সামনে রেখে উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেছেন, ভুলে গেলে চলবে না পৃথিবীতে ভাষার জন্য একমাত্র বাঙ্গালিরা জীবন দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। পৃথিবীতে যা আর কোন জাতি করেনি। বাঙ্গালীদের আত্মত্যাগের কারণেই আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘ভাষা ও সংস্কৃতি মেলা’ বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতিকে একীভূত করবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ মেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে সুদৃঢ় করবে। স্ব-স্ব ভাষা-সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটাবে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ভাষা-ভাষিদের ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘ভাষা ও সংস্কৃতি মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ’র সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামছুল হক, মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মো. জাকির হোসেন ও মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ আলী বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. মনছুর আলী, মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা, মাটিরাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশে অবিলম্বে মাটিরাঙ্গার গনপাঠাগার চালু করার কথা উল্লেখ করে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামছুল হক বলেন, এ পাঠাগারই হবে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জ্ঞান অর্জনের সূতিকাগার।
সভাপতির বক্তব্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ মেলা আয়োজনে সহযোগিতার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ মেলা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করবে। নিজের মায়ের ভাষার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে। নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি লালনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষক-সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
‘ভাষা ও সংস্কৃতি মেলা’য় বাঙ্গালী, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন ভাষাভাষিদের নিজস্ব ভাষা নিয়ে পৃথক পৃথক স্টল সাজানো হয়েছে। এছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ও এনজিও তাদের নানা কর্মকান্ড নিয়ে স্টল সাজিয়েছে মেলা মাঠে। এবারই প্রথম মেলা মাঠে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে ‘মাটিরাঙ্গা মহিলা কলেজ’।
উদ্বোধন শেষে আমন্ত্রিতদের সাথে নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ভাষা-ভাষীদের ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘ভাষা ও সংস্কৃতি মেলা’ চলবে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এমনটাই জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।