ভালবাসার রং লেগেছে সবুজ পাহাড়ে
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক ॥
”আজ দুঃখ ভুলার দিন, আজ মন হবে যে রঙ্গিন, আজ প্রাণ খুলে শুধু গান হবে, সুর হবে সীমাহীন”। সত্যই মন রঙ্গিন করে, বসন্ত বাতাস আর হৃদয় উজাড় করা ভালবাসার দিনে মন রঙ্গিন হওয়াটাই স্বাভাবিক। গানের এই ছন্দটি যেন বাস্তব জীবনে রূপ পেয়েছিল ভালবাসা দিবসে। ভালবাসা দিবসে উপজাতীয় ললনাদের বাহারী পোশাকের পাশাপাশি বাসন্তী শাড়ি পড়ে বাঙ্গালী মেয়েরাও সেজেছিল অনন্য সাজে। প্রিয়জনের সাথে অবসর উদযাপন অথবা হৃদয়ের কথা জানাতে সকলেই ভীড় জমিয়েছিল পাহাড়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। মেয়েদের খোঁপায় ছিল সাজানো ফুল, কারো হাতে ছিল লাল টুকটুকে গোলাপ, কেউবা এসেছিল তার প্রিয় মানুষটিকে সময় দিতে, আবার কেউবা এসেছে একা, উদ্দেশ্য একটাই দিবসটি যেন বছরের অন্যদিনের চেয়ে ভাল কাটে।
সবখানেই কোলাহল আর উপচে পড়া ভিড় দিনটিকে করেছে প্রাণবন্ত। খাগড়াছড়ি’র উপজেলার হৃদয় রঞ্চন কার্বারীপাড়ায় অবস্থিত আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রটি খাগড়াছড়ি জেলায় সরকারী ভাবে নির্মিত একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। ভালবাসা দিবসে এই বিনোদন কেন্দ্রটি ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। দিনভর হইচই, বনভোজন আর নাচ-গান আর ফানের আবহে কেটেছে তরুণ-তরুণীদের।
এছাড়াও সবুজের সমারোহে অবস্থিত রিচাং ঝর্ণায় ছিল ভিন্ন আমেজ। শত শত মানুষের ভিড়ে ঝর্ণার পানিতে উল্লাসে মেতে উঠেছিল দর্শনার্থীরা। কেউবা করছিল স্নান, আবার কেউবা মনের আনন্দে পিচ্ছিল খাচ্ছিল ঝর্নার বয়ে যাওয়া পানির শ্যাওলা সবুজ কুন্ডে, কেইবা ঝর্ণার পানিতে পায়ের পাতা ভিজিয়ে নিজেকে নীল নির্জনে হারিয়ে উপভোগ করছিল স্রষ্টার অপার সৃষ্টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।
শুধু তাই নয়, জেলা শহরের অদূরে পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্য্য উপভোগের স্থান নিউজিল্যান্ডে ছিল অজস্র মানুষের ঢল। এই দিনের পড়ন্ত বিকেলে স্থানটিতে সবাইকে আসতে হবে, নতুন করে যেন এমন রীতি চালু ছিল খাগড়াছড়ি শহরে। নিউজিল্যান্ডে কাছাকাছি এসে রিকসা ছেড়ে দিয়ে পায়ে হেটে আসা অথবা জোড়ায় জোড়ায় বসে আড্ডা দেওয়ার দৃশ্য ছিল সত্যই উপভোগ্য।
এছাড়াও আলুটিলা বড়তল, হ্যারিটেজ পার্ক, জেলা পরিষদ পার্ক, ঝুলন্ত ব্রীজে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি সত্যই প্রমাণ করে বসন্তে ভালোবাসার রং লেগেছে সবুজ পাহাড়ে। উল্লেখ্য, পৃথিবীতে মানুষের আগমণের পূর্বথেকেই ভালবাসার জন্ম। প্রতি বছর এ দিনটিতে নানারূপে প্রকাশিত হয় ভালোবাসা। যদিও ভালোবাসার প্রকাশ কোনো দিনক্ষণ মানে না। তবুও ১৪ ফেব্রুয়ারী নতুন প্রজন্মের যুবক-যুবতীদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ।