ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ: ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন, পুলিশের উপর হামলা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি 

Chakaria Pic. (Murder) 19.08

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় চিংড়ি প্রকল্পের ব্যবসার হিসেব চাওয়ায় এক অংশীদারকে চিংড়িঘেরে কৌশলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় ময়নাতদন্ত ছাড়াই ওই অংশীদারের লাশ দাফন করে ফেলার একদিন পর হত্যকাণ্ডের রহস্য ফাঁস হওয়ায় ক্ষুদ্ধ জনতা এক মহিলাসহ দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। কিন্তু সোপর্দ করা দুইজনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালায়। এ সময় হামলায় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এর পর পরই বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ক্ষুদ্ধ জনতা চিংড়ি প্রকল্পের সিন্ডিকেট কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী বাজারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। মেরে ফেলা ব্যবসায়িক অংশীদারের নাম রফিক আহমদ (৪৫)। তিনি উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের দুই নম্বর ব্লকের মাতারবাড়ি পাড়ার মৃত আবু ছৈয়দের পুত্র।

নিহতের স্বজন এবং এলাকাবাসী জানায়, গত বুধবার রাতে বদরখালী তিন নম্বর ব্লকের ‘বড় লবণ মাঠ চিংড়ি প্রকল্পে’ পরিচালক ও অংশীদার রফিক আহমদ ঘেরের খামার বাড়িতে অবস্থান করে। এ সময় খামার বাড়িতে থাকা মাতারবাড়ি পাড়ার কামাল উদ্দিনের স্ত্রী আজবাহার বেগম ও সাতডালিয়া পাড়ার নজির আহমদের ছেলে প্রকল্পের সহকারী পরিচালক আবদুল আজিজ রাতের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে রফিক আহমদকে। এর পর রফিক আহমদ অচেতন হয়ে পড়লে তার অণ্ডকোষ চেপে হত্যা করা হয়।

নিহত রফিক আহমদের বড়ভাই মাষ্টার ওয়াইজ উদ্দিন দাবি করেন, চিংড়ি ব্যবসার এক কোটি ৭০ লক্ষ টাকার হিসাব চাওয়ায় ক্ষুদ্ধ হন সিন্ডিকেট প্রধান চেয়ারম্যান খাইরুল বশর ও সহকারী পরিচালক আবদুল আজিজ। এই দুইজনের ইন্ধনেই তার ছোটভাই রফিক আহমদকে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে দিয়ে অজ্ঞান করার পর অণ্ডকোষ চেপে হত্যা করে।

তিনি অভিযোগ করেন, কয়েকমাস আগে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রকল্পের সিন্ডিকেট প্রধান খাইরুল বশর ভোটের জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ করে। মূলত এই টাকা ব্যয় করা হয় চিংড়ি প্রকল্পের আয় থেকে। ওই টাকার হিসেব চাওয়ায় প্রকল্প পরিচালক ও অংশীদার রফিক আহমদকে সুকৌশলে খুন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খাইরুল বশর ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। এমনকি ব্যবহৃত মুঠোফোনের সংযোগ বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। আটককৃতদের ছাড়িয়ে নিতে হামলার সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘের পরিচালক রফিক আহমদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন