বৈসাবী ও বাংলা নববর্ষকে ঘিরে পাহাড়ে উৎসবের মাতোওয়ারা

Kawkhali Busabi pic- 10-04-16

কাউখালী প্রতিনিধি:

পাহাড়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবী ও বাংলা নববর্ষ বরণকে ঘিরে পাহাড় যেন উৎসবে মাতোওয়ারা। প্রতিটি এলাকা সেজেছে বর্ণিল সাজে।

অন্যান্য বছরের মত এবারও বেশ আনন্দমূখর পরিবেশে বৈসাবী ও বাংলা নববর্ষ পালনের জন্য নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। পাহাড়ের ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের ধর্মীয় আদর্শে এ উৎসব পালন করে আসছে। এ উপলক্ষ্যে রোববার সকাল দশটায় কাউখালীর ঘাগড়ায় বর্ণাঢ়্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে।

পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী লোকজনের সংস্কৃতি ও বৈচিত্র সংরক্ষণে এগিয়ে আসার আহ্বানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এবারের আয়োজন।

এই উৎসব উপলক্ষ্যে সকাল ১০টায় ঘাগড়া কলেজ মাঠে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল র‌্যালির। সাবেক মেম্বার শরৎ চন্দ্র চাকমার নেতৃত্বে র‌্যালিটি উদ্বোধন করেন। র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন জনসংহতি সমিতি কাউখালী শাখার সভাপতি সুবাষ চাকমা। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, পিসিপি কাউখালী শাখার সভাপতি কাজল চাকমা, সাধারণ সম্পাদক চাইহলাপ্ররু মারমা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, ধারশমনি চাকমা প্রমূখ।

র‌্যালিটি কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে, ঘাগড়া বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

বাংলা নববর্ষকে পাহাড়ের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে পালন করে থাকে। নিয়মানুযায়ী আগামী ১২ ও ১৩ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায় পালন করবে বিজু। ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল মারমা সম্প্রদায় পালন করবে সাংগ্রাই অনুষ্ঠান। বর্ষবরণকে ঘিরে পার্বত্য জেলা এখন যেন খুশির আমেজে ভরা।

উৎসবকে সফল করতে পাড়ায় পাড়ায় চলছে ব্যাপক প্রচারণা। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে প্রতিটি অলি গলি। নিত্য নতুন পোষাকে সজ্জিত শিশু থেকে শুরু করে প্রবীণ পর্যন্ত।

উৎসবকে ঘিরে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে প্রতিটি পরিবার তাদের সাধ্যমত সংগ্রহের ভা-ারে জামা করছে রকমারি তরিতরকারি।

চৈত্রের শেষ দিনকে মূল বিঝু হিসেবে পালন করা হয়। এটাই হচ্ছে মূল উৎসব। এই দিনে সবার ঘরে বিশেষ ধরণের খাবার পাঁচন রান্না করা হয় যাতে অন্তত পাঁচ পদের তরিতরকারির থাকবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরণের পিঠা, তিলের নাড়ু, বিন্নি ধানের খৈ ও মিষ্টি তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি অতিথিদের মদও পরিবেশন করা হয়। চাকমা যুবতী মেয়েরা কোমড়ে নিজেদের তৈরি রাঙ্গা খাদি পরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়। তাছাড়া যুবক যুবতীরা এক সঙ্গে ঘিলা, পোত্তি (বউচি) প্রভৃতি খেলায় মেতে উঠে। পাহাড়ের মানুষের একটাই কামনা কোন ধরণের সংঘাত সহিংসতা ছাড়াই যেন বরণ করা যায় বাংলা নববর্ষকে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন