বৈসাবির শুরুতে উত্তপ্ত পাহাড়: ১২ ঘন্টায় ২ খুন

স্টাফ রিপোর্টার:

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার কেঙ্গালছড়িতে জেএসএস সংস্কারের সাধন চাকমা (২৮) নামের এক নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে। বুধবার বিকাল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। সে খাগড়াছড়িস্থ মহালছড়ি উপজেলার মধ্য আদম এলাকার রবিচন্দ্র চাকমার ছেলে। এ নিয়ে নানিয়াচর উপজেলায় একই দিনে দু’টি ঘটনায় দু’গ্রুপের দু’জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র জেএসএস সংস্কারের বরাতে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সাধন চাকমা মহালছড়ির মগাছড়িতে তার শশুর বাড়িতে বেড়াতে এলে বুধবার বিকাল ৫টার দিকে ইউপিডিএফের ৪/৫ জন সশস্ত্র কর্মী তাকে শশুরবাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার কেঙ্গালছড়ি ব্রিজের উপর গুলি করে হত্যা করে।

অপরদিকে একইদিনে দুপুরে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় প্রতিপক্ষের ব্রাশফায়ারে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র (ইউপিডিএফ) জনি তঞ্চঙ্গ্যা (৩২) নামের একজন সশস্ত্র সদস্য ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। বুধবার দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার সাবেক্ষং ইউনিয়নের বেতছড়ি ফরেস্ট অফিস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ইউপিডিএফ’র সশস্ত্র নেতা জনি তঞ্চঙ্গ্যার নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল মঙ্গলবার (১১এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সংস্কার’র (জেএসএস) খাগড়াছড়িস্থ মহালছড়ি থানা কমিটির সদস্য টনক চাকমা এবং রিগেন চাকমাকে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা থেকে তুলে নিয়ে তাদের ক্যাম্পে বেধড়ক মারপিঠ করে। ওইদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ১৯ঘন্টার মধ্যে জেএসএস সংস্কার ইউপিএিফ’র সশস্ত্র নেতা জনি তঞ্চঙ্গ্যাকে হত্যা করে বলে জানা গেছে।

এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর এলাকায় কালোময় চাকমা নামে এক জেএসএস সংস্কার কর্মীকে অপহরণ করা হলেও রাতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জেএসএস নেতা সুধাকর ত্রিপুরা বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।

নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, নিহত জনি তঞ্চঙ্গ্যার মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসেছি । ওইদিন বিকেলে সাধন চাকমার হত্যাকান্ড ঘটনার সম্পর্কে তিনি অবগত নয় বলে জানান তিনি। পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, এ ঘটনায় কোন পক্ষ এখনো মামলা দায়ের করেননি।

এদিকে পাহাড়ের সবচেয়ে বৃহৎ উৎসব বৈসাবির আগে হঠাৎ করে খুন, অপহরণ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশেষ করে আজ থেকে শুরু হওয়া এই বৈসাবি অনুষ্ঠানের মধ্যে নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা তাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে গেলো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন