Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

বৃষ্টি স্নাত ঈদ উৎযাপন সারাদেশে: আমেজে ঘাটতি

%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a7%8d

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঝুম বৃষ্টিতে সারা দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন স্থানে প্রবল বর্ষণ হয়। এর মধ্যেই হয় ঈদের জামাত। জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম মসজিদ এবং অন্যান্য স্থানে হয় ঈদের জামাত। বিশেষ করে খোলা স্থানে জামাত আয়োজন করা যায়নি। জামাত সরিয়ে নিতে হয়েছে মসজিদে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ মঙ্গলবার জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। ছবি: ফোকাস বাংলাহজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগ ও আনুগত্যের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুসল্লিরা আজ সকালে ঈদগাহ বা মসজিদে সমবেত হয়ে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেছেন। বাড়ি ফিরে ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি দেন মুসল্লিরা।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ মঙ্গলবার জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দেশের সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতার থেকে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

%e0%a6%9f%e0%a6%9a%e0%a6%a1

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগেই বলা হয়েছিল, আজ মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। সেটাই সত্য হলো। তাই, বৃষ্টি মাথায় শুরু হলো পবিত্র ঈদুল আজহা, মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল সোমবার রাত থেকে এর দাপট আরও বেড়েছে। বৃষ্টির মুখরতা আরও দীর্ঘ হতে পারে—তেমনটাই জানিয়ে রেখেছেন আবহাওয়াবিদেরা। সামনের কয়েকটি দিন এভাবে চললে বৃষ্টিতেই কাটাতে হবে ঈদ উৎসব।

সারা দেশে বৃষ্টি হলেও ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে এর মাত্রা বেশি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টির ধারাবাহিকতা চলছে। গতকাল সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত রাজধানীতে ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে টাঙ্গাইলে; সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত এখানে পরিমাণ ছিল ১৬ মিলিমিটার।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ পড়েছেন স্কুল শিক্ষক ও শাহজাহানপুরের বাসিন্দা আবদুস সোবহান। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে বাসা থেকে বের হতে পারছিলাম না। ২০০ টাকায় রিকশা ভাড়া করে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় ঈদগাহে আসি। এখানে এসে আবার আরেক সমস্যা। পুলিশের বারবার চেকআপ। ফাইনালি  নামাজ পড়ে বাসায় যেতে পারলাম।’

নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহে কঠোর ব্যবস্থাপনাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক যে জায়গায় রাষ্ট্রপতি নামাজ পড়বেন সেখানে একটু কঠোর নিরাপত্তা দরকার। তবে একজনকে একবার তল্লাশি চালানোর পর আবার সন্দেহ করে তল্লাশি করাটা কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শাফায়াত সিদ্দীক বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে যখন জাতীয় ঈদগাহে প্রবেশ করবো তখন বলা হলো মোবাইল নিয়ে ভেতরে যাওয়া যাবে না। এ কারণে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে থাকলাম ১৫ মিনিট। পরে উর্ধ্বতন একজন এসে বললেন মোবাইল নিয়ে যেত পারবো। অবশেষে ঈদগাহের ভেতরে গেলাম।’

ঈদের নামাজ শেষে পশু কোরবানি দিতে গিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। বৃষ্টির পানিতে গলির রাস্তা ডুবে যাওয়ার কারণে সিটি করপোরেশনের নির্দিষ্ট স্থানে ছিল জায়গা স্বল্পতা। বিশেষ করে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার মানুষদের বিড়ম্বনার মাত্রা ছিল বেশি।

রাজধানীর গোড়ান এলাকার বাসিন্দা সোহেল আহমদ বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। এর ভেতর সেখানে আবার স্থান সংকুলান হয় না। তাই বাসার সামনে গরু জবাই দিয়েছি। পরে বাসার ভেতরে নিয়ে মাংস কাটার কাজ করেছি।’

পুরানা পল্টনের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল। ঠিকমতো কোরবানি  দিতে পারিনি। মাংস বিতরণ করতে পারিনি। এ জন্য খারাপ লাগছে।’

স্কুল শিক্ষক নিলুফা ইয়াসমিন সুমি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে দিনটি মাটি হয়ে গেল। সারাদিন বাসায় কাটালাম। রাস্তায় পানি দেখে বাসা থেকে বের হওয়ার সাহস পাইনি।’

এদিকে বৃষ্টির প্রভাবে মৌসুমী কসাইদের কাজে বিঘ্ন ঘটে। তারা বলছেন, বৃষ্টি না হলে যে কাজ আজ (মঙ্গলবার) দুই ঘণ্টায় করেছি সে কাজ এক ঘণ্টায় করতে পারতাম।

14333187_333516723660411_7383111775292463398_n

কোরবানি দেওয়া পশুর রক্ত বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে লাল হয়ে যাওয়া নিয়ে অনেকে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছেন নানা পোস্ট। এদের মধ্যে একজন সাইফুল ইসলাম। তিনি লিখেছেন, রাস্তায় পানি সাথে রক্ত। কিভাবে বাসা থেকে বের হবো বুঝতে পারছি না।

এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। শিশুপার্ক, রমনাপার্ক, সোহারাওয়ার্দী উদ্যান, হাতির ঝিল, চিড়িয়াখানাসহ সকল বিনোদেন কেন্দ্রগুলোতে লোক সমাগম কম ছিল।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে।  মঙ্গলবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন টানা ছয় দিনের ছুটি ভোগ করছেন।

প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) নিজের ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের জন্য পশু কোরবানি করে থাকেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন