বৃষ্টি-গরম-আর্দ্রতায় শিশুর যত্ন
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
আবহাওয়ার আচরণ এখন অদ্ভুত—এই গরম তো এই বৃষ্টি। কখনো আর্দ্রতা এত বেড়ে যাচ্ছে যে ছোট-বড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। এমন পরিবেশে শিশুরা দ্রুত অসুস্থ হয়। এ সময় পানিবাহিত কয়েকটি রোগও ছড়ায়।
* গরমে সুযোগ পেলেই শিশুরা ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম খেতে চায়। গোসলের সময় বাথরুমে ঢুকলে বের হওয়ার নামই নেয় না। এসব থেকে শিশুদের ঠান্ডা লাগতে পারে। শরীর ঘেমে গিয়েও শিশুর সর্দি-কাশি হয়। এ সময় ওদের হালকা সুতির কাপড় পরাতে হবে। ঘাম-ধুলো-ময়লা রোগ বাড়াবে, তাই রোজ গোসল করান। এতে ঘামাচিও কম হবে। অনেকে গোসলের পরই ভেজা শরীরে পাউডার লাগিয়ে দেন। এটা ক্ষতিকর। ভেজা শরীরে পাউডার লাগালে তা লোমকূপ বন্ধ করে দিয়ে ঘামাচি আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই গোসলের পর ভালোভাবে শরীর মুছে শুকানো জরুরি।
* বৃষ্টির কারণে শহরে রাস্তায় ময়লা পানি জমে। এ থেকে শিশুদের ত্বকের সমস্যা হয়। ময়লা পানি শরীরে বা পায়ে লাগে। তাই বাড়ি ফিরে হাত-পা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ঘামে শরীর ভিজে গিয়েও ত্বকে সমস্যা হতে পারে। ঘামে ভেজা জামা তাড়াতাড়ি পাল্টে দিন। প্রয়োজনে স্কুলের পোশাক একাধিক তৈরি করুন, যেন আগের দিনেরটা পরদিন না পরতে হয়। গরমে ডায়াপার থেকে ফুসকুড়ি বা র্যা শ হয়, তাই এ সময় ডায়াপার না পরানোই ভালো। পরালেও বারবার পাল্টে দিন এবং আগে ত্বকে ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিন।
* এ সময় শিশুদের খাবার ও পানিবাহিত রোগ যেমন ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিসের প্রকোপ বাড়ে। এসব থেকে বাঁচতে চাই সতর্কতা। শিশুকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান। ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি রাস্তা থেকে কিনে নিজে খাবেন না, শিশুকেও দেবেন না। বাড়িতে খাওয়ার পানি ভালো করে ফুটিয়ে নেবেন। এ সময় শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই শিশু স্কুল থেকে ফিরলে বোতল বা ফ্লাস্ক খুলে দেখে নিন, সে কতটুকু পানি খেল। বয়সভেদে শিশুদের পানির চাহিদা ভিন্ন। ১ থেকে ৩ বছরের জন্য এক থেকে সোয়া এক লিটার, ৪ থেকে ৮ বছরের জন্য দেড় থেকে দুই লিটার এবং ৯ থেকে ১৬ বছরের শিশুর জন্য দুই থেকে আড়াই লিটার। শিশু যদি অস্থিরতা প্রকাশ করে, চোখ কোটরে ঢুকে যায় বা প্রস্রাব কমে যায়, তবে বুঝতে হবে পানিশূন্যতা হয়েছে, তখন বেশি পরিমাণে পানি খাওয়ান।
* খুব বেশি রোদে বা গরমে বাইরে খেলতে গিয়ে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। বিকেলে গরম কমলে খেলতে দিন। খেলাধুলার পর প্রচুর পানি পান করতে দিন বা লেবুর শরবত, ডাবের পানি ইত্যাদি দিন। এতে লবণের অভাব পূরণ হবে।