বিশ্ব পর্যটন দিবস : জমে উঠছে না পর্যটন ব্যবসা

DSC_0054

কক্সবাজার প্রতিনিধি::
আজ ২৭ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব পর্যটন দিবস। নানা আয়োজনে এ দিবসটি পালিত হয়েছে। আছে র‌্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টান। তবে দেশের পর্যটন রাধানী খ্যাত কক্সবাজারে তেমন ভাবে জমে উঠছে না পর্যটন ব্যবসা। এতে করে হতাশ হয়ে পড়েছে এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার। দেশের সর্ব দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত এ শহরকে পর্যটনের রাজধানী বলা হয়। কক্সবাজারে সড়ক,আকাশ ও নদী পথে আসার ব্যবস্থা রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার আসার সড়কটি এখনো খানা খন্দকে ভরা। বিমানে রয়েছে চড়া দাম। তার উপর সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ পানিতে তলিয়ে যায় বিশ্বের এ শহর ।

সারা বছরই রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশায় এ শহরে আগত দেশ-বিদেশী পর্যটক এবং স্থানীয়দের পড়ে থাকতে হয় দূর্ভোগের মাঝে। সাগর বালিকায় যেমন দূর্ঘটনা এড়াতে রাখা হয়নি নেটিং ব্যবস্থা, নেই এখানে রাতের আলো। বেসরকারী উদ্যোগে ৫ শতাধিক বিলাসবহুল হোটেল-মোটেল থাকলেও সমুদ্র বাদে বিনোদনের জন্য এখানে আর কিছু নেই। এছাড়া যোগ হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। ফলে ব্যবসায়ীরা ও হতাশ।

সৈকতের ঝিনুক মাকের্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোশারফ হোসেন দুলাল বলেন, কক্সবাজারের রাস্তা ঘাটের অবস্থা তেমন একটা ভাল না। এ কারনে পর্যটকের সংখ্যা ও কমে গেছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আছে,পর্যটক আসলে এখানে নিরাপত্তা খুব জোরদার থাকে। কিন্তু এখন পর্যটক না আসাতে আমাদের ব্যবসায়ীদের খুব খারাপ অবস্থা। বর্তমানে মৌসুম ভাল হলে ও তেমন পর্যটক নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা

হোটেল লং বীচ ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রতি বছরই আন্তজাতিক পর্যটন দিবস আসে। আমরা এ দিবসটিকে বরন করার জন্য নানা ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের আশানরুপ পর্যটক আসে নাই। তার অনেক গুলো কারন অবশ্যই রয়েছে। তার মধ্যে হরতাল,আসা যাওয়ার রাস্তার করুন দশা অন্যতম।
যানজট নগরী থেকে বিশাল সাগরের উর্মিমালায় গা ভাসাতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নারীদের জন্য রয়েছে নারী পুলিশ।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বললেন, আমরা সব সময় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টা বিশেষভাবে লক্ষ রাখি। এবারও পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টা আমরা লক্ষ রেখেছি। ট্যুারিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকে পুলিশ ও সেখানে দায়িত্ব পালন করে। মহিলা পুলিশ ও দায়িত্ব পালন করে। যেহেতু মহিলা ট্যুরিষ্টদের সংখ্যা অনেক বেশিএবং তাদের কে ভাটার সময় যেন পানিতে না নামে এ জন্য সচেতনতা মূলক প্রচারনা করা হয়। সরকার প্রতিবছর কক্সবাজারের পর্যটন খাত থেকে শতকোটি টাকা রাজস্ব পায়। অথচ বছর ঘুরে বছর যায় তারপরও পুরনো সেই চরিত্রই পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একমাত্র সম্বল বলে জানালেন কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা।

এসবের মাঝে ও পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার মতো কিছু উদ্যোগের খবর জানালেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন। তিনি বলেন,পর্যটন বিকাশের জন্য আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা নেটিং এর ব্যবস্থা করতেছি। ইতিমধ্যে নেটিং এর জন্য টেন্ডার দিয়েছি। নেট স্থাপন করবো,একটি এক্সক্লুসিভ জোন করা দরকার বিদেশীদের জন্য। যেখানে তাদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। সেরকম একটি ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। হিমছড়ি দরিয়া নগরে ক্যাবল কারের ব্যবস্থা করছি। এখানে যদি ক্যাবল কার স্থাপন করা হয় তা হলে দেখা যাবে যে পর্যটকরা আলাদা একটি পে¬ভার পাবে।

শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন দেখতে চায় পর্যটন ব্যবসায়ীসহ দূর দূরান্তের পর্যটকরা।
কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন সময় নেয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। অথচ সেই সব পরিকল্পনার অধিকাংশই এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাই দ্রুত এসব বাস্তবায়নের দাবী এ শিল্পের সাথে সংশ্লি¬ষ্টদের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন