বান্দরবানে মহা পিন্ডদান উৎসব

Bandarban pic-2 27.11
স্টাফ রিপোর্টার:
উৎসাহ উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের (কঠিন চীবর দান) মহা পিন্ডদান উৎসব পালন করা হয়েছে। শহরের পুরাতন রাজবাড়ি মাঠ থেকে শুক্রবার সকালে কঠিন চীবর দানোৎসবের র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় রাজ গুরু বৌদ্ধবিহারে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বান্দরবান জেলা জজ শফিকুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, সহকারি পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ, রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের অধক্ষ্য উ প ঞা জোত থেরসহ শতশত নারী পুরুষ অংশ নেয়।

বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে কঠিন চীবর দানের পর ভিক্ষুদের সম্মানে পিন্ড দান (রান্না করা খাবার) বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। শহরের জাদী পাড়া, উজানী পাড়া, মধ্যমপাড়া, রাজবাড়ি এলাকায় সারিবদ্ধভাবে প্রায় চারশ বৌদ্ধ ভিক্ষু, দায়ক-দায়িকা খালি পায়ে পিন্ডদান অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। পূণ্য লাভের আশায় শত শত শিশু-কিশোরী ও নারী-পুরুষ সারিবদ্ধ ভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষুদের পিন্ডদানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্ন খাবার দান করেন। এসময় বৌদ্ধ মূর্তীকে পূজা শেষে নগদ অর্থ দান করে বৌদ্ধলম্বীরা। পিন্ডদান উৎসব দেখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমায় বান্দরবান শহরে।

আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ভিক্ষুরা বর্ষাবাস পালন করে। এরপর কঠিন চীবর দানউৎসব শেষে পিন্ডদান উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ উৎসবকে ঘিরে মন্দির গুলোর পাশাপাশি পাহাড়ী পল্লী গুলোকেও রং বে রঙে সাজানো হয়েছে। এদিকে কঠিন চীবর দানোৎসবে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে পঞ্চশীল প্রার্থনা ও প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়।

প্রচলিত আছে গৌতম বৌদ্ধ খালি পায়ে হেটে হেটে বিভিন্ন বৌদ্ধ পল্লীতে ছোয়াং (খাদ্য) সংগ্রহ করতেন। তারই ধারবিহিকতায় বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মলম্বীরা যুগযুগ ধরে এই উৎসব পালন করে আসছে।

প্রসঙ্গতঃ চরকা ঘুরিয়ে তুলা থেকে সুতা তৈরি করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারীরা। রাতের মধ্যে সেই সুতায় রঙ লাগিয়ে কাপড় বুনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য তৈরি করা হয় চীবর (কাপড়)। পরের দিন ভিক্ষুদের মধ্যে দান করার নামই হচ্ছে কঠিন চীবর দান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন