বাঘাইছড়ি পৌর নির্বাচনে জয় পরাজয়ের ফ্যাক্টর দেড় হাজার পাহাড়ি ভোট

Rangamati Pic-10-02-17 copy

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘাইছড়ি থেকে:

বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে জয় পরাজয়ের হিসেব কষতে শুরু করেছেন ভোটারার। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভোটের হিসেবে নতুন সমিকরণ যোগ হচ্ছে। প্রার্থীরাও নতুন নতুন কৌশলে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছে। বাঘাইছড়ি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদের তিন জনই বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের। কিন্তু পৌর এলাকায় রয়েছে দেড় হাজারের অধিক উপজাতীয় ভোটার। উপজাতীয় কোন প্রার্থী না থাকায় এসব ভোট জয় পরাজয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

বাঘাইছড়ি পৌরসভায় এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ১০হাজার ১৭৭জন। এর মধ্যে উপজাতীয় ভোটার রয়েছেন দেড় হাজারের অধিক। এসব উপজাতীয় ভোটার পৌর এলাকার ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। এবারো বাঘাইছড়ি পৌরসভায় মেয়র পদে কোন উপজাতীয় প্রার্থী নেই। তাই উপজাতীয়দের ভোটের উপর মেয়র পদে জয় পরাজয় নির্ভর করছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। উপজাতীয় ভোট ব্যাংক নিয়ে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভোটের নানা হিসেব মেলাচ্ছে। তবে মুখ খুলছেন না উপজাতীয় ভোটাররা। ফলে ঠিক কোন প্রার্থীর পক্ষে উপজাতীয়রা রায় দেবেন তা এখনি বিষয়টি স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজাতীয়রা যাকেই ভোট দিক না কেন তাদের অধিকাংশ ভোট এক দিকে ঝুঁকতে পারে।

এদিকে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনিত প্রার্থী উপজাতীয় ভোট ভাগে আনার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। উপজাতীয়দের ভোট নিজেদের পক্ষে আনতে নানা ফন্দি ফিকির করছে। ইতোমধ্যে প্রধান দুই দলের প্রার্থীরা উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকায় একাধিক বৈঠক করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজাতীয় ভোটারদের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছে পাহাড়িদের আঞ্চলিক সংগঠন সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস ও সংস্কারপন্থি জেএসএস হিসেবে পরিচিত জেএসএস এমএন লারমা। এ দুটি সংগঠনের হাই কমান্ডের নির্দেশে উপজাতীয়রা তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকার মধ্যে অধিকাংশই সংস্কারপন্থি জেএসএস নিয়ন্ত্রিত কিছু অংশ নিয়ন্ত্রন করছে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস।

এদিকে দীপংকর তালুকদারের সাথে পাহাড়িদের দুরত্বের কারণে কিছুটা চিন্তিত আওয়ামী লীগ। তবে গতবারের নির্বাচনে অধিকাংশ উপজাতীয় ভোট আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে যায়। সে হিসেবে আশাবাদি আওয়ামী লীগ। অপরদিকে সংস্কারপন্থী জেএসএস’র সাথে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দুরত্ব তৈরি হয় বিএনপির। তাই পাহাড়িদের একটি অংশের ভোট নিজেদের পক্ষে আনার ব্যাপারে বিএনপিকে বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে দুই দলই পাহাড়িদের ভোট নিজেদের পক্ষে আসতে পারে বলেও মনে করছে।  অভিজ্ঞরা মনে করছেন সব সমিকরণ শেষে পাহাড়িদের ঐক্যবদ্ধ ভোট যে দিকে যাবে সে দিকেই জয়ের পাল্লা ভারি হতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন