বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকানোর উদ্যোগ নেই বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকানোর কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না বিএনপি। ২৭ জানুয়ারি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন হলেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম উদ্দিন বাহার মনোনয়ন প্রত্যাহার করবে কিনা এ ব্যাপারে কোন কিছুই নিশ্চিত করতে পারেনি জেলা বিএনপির নেতারা।

জেলা উপজেলা বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিবেন এমন বিশ্বাস নিয়ে আছেন সকলে। এ ছাড়া এ মুহুর্তে কোন উদ্যোগ না থাকলেও বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তাকে বহিষ্কারের অপেক্ষায় আছেন জেলার নেতারা।

দলীয় সূত্রে জানাগেছে, বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিমের সাথে প্রার্থীতা প্রত্যাহার নিয়ে এ পর্যন্ত কোন বৈঠকও হয়নি। কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমকে এ বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হলেও এখনো পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নির্বাচনী মাঠে এখনো পুরোদমে সক্রিয় রয়েছে সেলিম উদ্দিন বাহার ও তার সমর্থকরা। এ অবস্থায় দ্বিধা দ্বন্দে আছেন বিএনপির কর্মী, সমর্থক ও ভোটাররা। এ অবস্থা চলতে থাকলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুযোগ নিবে বলে মনে করছেন বিএনপির কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা। এ পৌর সভায় বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন দেয় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ওমর আলীকে।

দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিম উদ্দিন বাহারের সাথে এ ব্যাপারে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পার্বত্য নিউজকে বলেন, আমি দল থেকে মনোনয়ন চাওয়ার পর জেলার কিছু নেতার কারসাজির কারণে মনোনয়ন পাইনি। সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলে এবং কর্মী সমর্থকদের দাবির কারণে আমি মনোনয়ন পত্র জমা দিই। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহার বা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আমি এখনো দল থেকে কোন ডাক পাইনি। তিনি অভিযোগ করেন, এ ব্যাপারে তার সাথে আলোচনা করার জন্য রাঙামাটি, চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা বলে তিনদিন হয়রানি করা হয়েছে। ২৩ জানুয়ারি রাঙামাটি জেলা বিএনপির কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের উপস্থিতিতে সেলিম বাহারের বৈঠকের কথা বলে তাকে রাঙামাটি ডেকে নিয়ে আসা হয়। পরে সে বৈঠক পিছিয়ে ২৪ জানুয়ারি সকাল ৯টায় চট্টগ্রামের হাটহাজারি হওয়ার কথা থাকলেও জেলা বিএনপির নেতারা সময় না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত সে বৈঠকও বাতিল করা হয়।

সেলিম বাহার বলেন, “দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমি তিন দিন ছুটাছুটি করলেও আমার সাথে কোন বৈঠক বা যোগাযোগ রাখা হয়নি। আমি দল থেকে কোন সিদ্ধান্ত না পেয়ে উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছি। দলীয়ভাবে বৈঠকের পর সকলের মতামতের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত হতো আমি তা দলের স্বার্থে মেনে নিতাম”।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহ আলম জানান, একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো তা হয়নি। পৌর নির্বাচনে যে বিদ্রোহী প্রার্থী আছে তাকে সরানোর জন্য এবং নিজেদের বিরোধ নিজেরাই আলোচনা করে মিটিয়ে ফেলার জন্য উপজেলার নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিএনপির দলীয় মনোনিত প্রার্থী মো. ওমর আলীর সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি পার্বত্য নিউজকে বলেন, দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে আলোচনা করার জন্য বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলার সিনিয়র নেতাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি না।তিনি আশা প্রকাশ ক রে বলেন, “মান অভিমান থেকে সেলিম বাহার মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তিনি দলের প্রতি সম্মান রেখে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিবেন বলেও আমি বিশ্বাস করি”।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পনির বলেন, দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ওমর আলীকে তার সাথে দলের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিম বাহারকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীর সাথে কাজ করার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেলিম উদ্দিন বাহার তার মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট মামুনুর রশীদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি, রাঙামাটি পৌর বিএনপির সভাপতি শফিউল আজমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন