বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডিপথেরিয়ায় ৯জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৭শ’র বেশি
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের মাঝে এইচআইভির পর নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ডিপথেরিয়া রোগ। এ রোগে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে সাতশ’র বেশি রোহিঙ্গা শিশু।
১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের মধ্যে ৯জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সংক্রামক এই ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে রোহিঙ্গাসহ স্থানীয়দের মাঝে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) থেকে প্রতিষেধক টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গত কয়েক মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ৬৪৬,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জানায় যে এ পর্যন্ত সাতশ’র বেশি রোহিঙ্গা ডিপথেরিয়া রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ শিশু।
সংক্রামক ব্যাধি ডিপথেরিয়া আক্রান্তের হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে খুব দ্রুত অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির গলার পেছন দিকে সরু পর্দা তৈরি হয়। এতে শ্বাসকষ্ট, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, পক্ষাঘাতসহ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, ডিপথেরিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া যে বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে তা শ্বাসযন্ত্রের, বিশেষ করে নাক ও গলার টিস্যুকে নষ্ট করে দেয়।
ডিপথেরিয়ার লক্ষণগুলো দেখা যায় ইনফেকশন হওয়ার দুই থেকে সাত দিন পর। ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার জ্বর থাকে।
ক্লান্তি ও শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। গলাব্যথা হয়। গলার গ্রন্থি ফুলে যায়। ঢোক গিলতে সমস্যা ও ব্যথা হয়। অনেক বেশি কাশি হয়। শিশুরাই মূলত এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
এ রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমে অ্যান্টিটক্সিন ইনজেকশন দিয়ে ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে হয়। এ ছাড়া ইরাথ্রোমাইসিন ও পেনিসিলিনের মতো এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয় ইনফেকশন দূর করতে।
যেহেতু এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই ডিপথেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের আলাদা রাখা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উখিয়ার ৪৮টি ও টেকনাফের ১২টি ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের মাঝে ডিপথেরিয়া রোগের প্রতিষেধক টিকা দেয়া হচ্ছে।
সূত্র: south asian monitor