বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিজিপির গুলি, গুলিবিদ্ধ ২

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার:

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গুলি ছুড়েছে মিয়ানমার বর্ডারগার্ড পুলিশ (বিজিপি)। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে  দুই যুবক। এদের মধ্যে রয়েছে একজন স্থানীয় ও একজন রোহিঙ্গা। তাদেরকে উখিয়ার কুতুপালং রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার (৪নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের উখিয়ার রহমতের বিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ওসি(তদন্ত) খায়রুজ্জামান। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ যুবকদের মধ্যে একজন স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়নের রহমতবিল গ্রামের শাহাব উদ্দিন ছেলে জয়নাল আবেদিন (১৩) ও উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ এর বাসিন্দা আমির হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সীমান্তের সাথে লাগোয়া উখিয়ার বালুখালীর রহমত বিল এলাকার স্থানীয় আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে রাখাল হিসেবে কাজ করতো রোহিঙ্গা যুবক নুরুল ইসলাম।

প্রতিদিনের ন্যায় আজও তার সাথে স্থানীয় জয়নাল আবেদিন সীমান্তের পাশাপাশি এলাকায় গরু চরাতে গেলে সীমান্তের ওপার থেকে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। রোহিঙ্গা যুবক নুরুল ইসলামের ডান হাতে গুলি লাগে বলে জানা গেছে।

পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকে লক্ষ্য করেও কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে বিজিপি। পরে গুলিবর্ষণ থামলে গুলিবিদ্ধ নুরুল ইসলামকে উদ্ধার করে উখিয়ার রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হঠাৎ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের বিজিপির গুলিবর্ষণের ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে জানান।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, ওই যুবক সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু চরাতে গিয়েছিল। এ সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। পরে সে ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সীমান্তে কোনো উত্তেজনা না থাকলেও বিজিপির এই গুলি ছুড়ার বিষয়টি গায়ে পড়ে মিয়ানমার কর্তৃক উত্তেজনা সৃষ্টির পায়তারা বলেই মনেকরা হচ্ছে। এতে করে উত্তজনা ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায়।

এডশনাল এসপি ইকবাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নতুন কোনো ঘটনা নেই। পরস্থিতি শান্ত আছে। তবে এর একটা সুরাহা হবে।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালে মিয়ানমারের অাভ্যান্তরীণ সমস্যার কারণে বাংলাদেশ লাখ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বহন করে চলেছে। সেনা-পুলিশের অভিযানে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতে চাইলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীরা এপর্যন্ত বহুবার গায়ে পড়ে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। কিন্ত বাংলাদেশের বিজিবি ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের সেই ফাঁদে পা দেয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন