বাংলাদেশি’ জাতীয়তা দিয়ে বিত্তশালী রোহিঙ্গাদের ‘নাগরিকত্ব’ দিচ্ছে মিয়ানমার!

 

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞের মুখে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পরেও মংডু ও বুচিডং শহর এবং শহরতলিতে ব্যবসায়ী ও বিত্তশালী রোহিঙ্গাদের একটি অংশ রয়ে গেছেন। ওই ব্যবসায়ীদের দেয়া হচ্ছে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনডিসি), যাতে জাতীয়তার ঘরে লেখা রয়েছে ‘বাংলাদেশি’।

রেঙ্গুনের এরাউদীভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ম্যাক্সিমা’য় প্রকাশিত এক সংবাদে জানা হয় এ তথ্য।

ওই সংবাদে বলা হয়েছে- মংডু ও বুচিডংয়ে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ রোহিঙ্গারা এনডিসি কার্ড নিচ্ছেন।

মিয়ানমার বলছে, এ কার্ড নিলে তারা মিয়ানমারে থাকতে পারবেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও করতে পারবেন। বড় ব্যবসা ও বিপুল সম্পদ হাতছাড়া না করতে ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে তারা কার্ড নিচ্ছেন।

এদিকে সম্পদ ও সম্পত্তি রক্ষা, ব্যবসা টিকিয়ে রাখা- সর্বোপরি মিয়ানমারে থাকার আশায় এ কার্ড নিচ্ছেন রোহিঙ্গারা। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসতে পারেননি, তাদের নাগালে পেলেও এ কার্ড নিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য সীমান্ত থেকে তাদের সরিয়ে মিয়ানমারের ভেতরে নেয়া হচ্ছে।

মংডু ও বুচিডং শহর এবং শহরতলিতে এখনও ১০ শতাংশ রোহিঙ্গা রয়ে গেছেন। তাদের প্রায় সবাই ব্যবসা-বাণিজ্যে যুক্ত। এসব ব্যবসায়ী ব্যবসার স্বার্থে এনডিসি কার্ড নিচ্ছেন।

তারা আরও জানান, এ ছাড়া আকিয়াবের আইডিপি ক্যাম্পের ২ লাখ ৯০ হাজার এবং কিয়াত্তর ও মাম্ভ্রারা এলাকায় আরও ২ লাখ রোহিঙ্গা এখনও রয়ে গেছে। তাদের মধ্যেও মিয়ানমার সেনা সদস্যরা এনডিসি কার্ড বিতরণ করছে। জন্মভূমিতে থাকতে পারবেন- এ আশায় তারা তা গ্রহণও করছেন।

এ ব্যাপারে এক রহিঙ্গা নেতা বলেন, ওই এনডিসি কার্ড দেখিয়েই মিয়ানমার প্রমাণ করতে চাইবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি। আর বাংলাদেশিদের ফেরত না নেয়ার জন্য তো ইতিমধ্যেই মিয়ানমারে উগ্র বৌদ্ধরা বিক্ষোভ শুরু করেছে।

ঐ রোহিঙ্গা নেতা বলেন, এ কার্ড নেয়ার অর্থ হচ্ছে- ‘আমরা বাংলাদেশি, ব্যবসা করতে এখানে এসেছি। মিয়ানমারের নিয়মকানুন মেনে আমরা ব্যবসা করব।’

তিনি বলেন, যদি থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ১০ শতাংশও এ কার্ড গ্রহণ করে, তবে এ পর্যন্ত যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন তাদের ফিরে যাওয়া আরও কঠিন হবে।

‘মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত যেসব রোহিঙ্গা রয়ে গেছেন, তারা যদি এনডিসি কার্ড গ্রহণ করেন তা হলে রোহিঙ্গারা বাঙালি বলে প্রমাণিত হবেন। ফলে এ দেশে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার মিয়ানমারে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্টের পর থেকে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রায় চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু এ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে একাধিক আশ্রয়শিবির স্থাপন করা হয়েছে।

 

সূত্র: বিডি মর্নিং

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন