বাকঁখালী নদী থেকে দোছড়ির পাইরু মুরুংয়ের লাশ উদ্ধার
মো.আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
রামুর বাঁকখালী নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাসীন্দা পাইরু মুরং (৪০) নামে এক উপজাতী ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
দোছড়ি খালের উজান থেকে বাকঁখালী নদীতে ভেসে আসার সময় শনিবার সকালে রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় জনৈক আলাউদ্দিন লাশটি নদীতে ভাসতে দেখে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যনকে খবর দিলে সকাল ১১টায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় মরদেহটি উদ্ধার করে তীরে আটকিয়ে রাখা হয়।
নিহত পাইরু মুরং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেংরু মুরং হেডম্যান পাড়ার মেংকিং মুরুং এর ছেলে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ শনিবার বেলা ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গত ২৬ জুলাই পাইরু মুরুং নিজ গ্রাম থেকে শ্বশুড় বাড়িতে ধান আনতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। শনিবার লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তিনি নিহতের পরিবার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করেন। পরিবার লাশ গ্রহণ করার পর সরকারীভাবে সৎকারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
খবর পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু শাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলাম বাকঁখালী নদীর তীরে ছুটে যান। পরে দুপুরে জেলা পরিষদ সদস্য ক্যউচিং চাক, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক তসলিম ইকবাল চৌধুরী, তারগু মৌজা হেডম্যান মংনু মার্মা ঘটনাস্থলে যান।
সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আবুল খায়ের জানান- উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তিনি প্রথমে মুরুং বাসিন্দার লাশ পাওয়ার খবরটি শুনেছেন। তবে ঘটনাস্থল রামু থানার অধীনে হওয়ায় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা এলাকা দেখবেন বলে জানান।
নিহতের চাচা ও ২৮২ কামির ছড়া মৌজা হেডম্যান মেনরাউ মুরুং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ২৬ জুলাই ভারি বর্ষণ চলাকালীন পাইরু মুরুং পার্শ্ববর্তী চাষাবাদ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পরে তিনি নিরাপদ স্থানে পৌঁছার সময় কামিরছড়া পাহাড়ী ঝিরিতে পড়ে ভেসে যায় বলে নিশ্চিত করেছেন। পাইরু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ নেওয়া হয়।
দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহামদ জানান সম্প্রতি বন্যায় পাইরু মুরুং ঝিরির পানিতে ভেসে যাওয়ার খবর তিনি শুনেছেন তবে সন্ধান পাওয়া লাশটির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
ঘটনাস্থল গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই পলাশ চন্দ্র সিং এ প্রতিবেদককে জানান, শনিবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহতের পরিবার লাশ সনাক্ত করে তাদের কোন আপত্তি না থাকলে লাশটি নিয়ে যেতে পারেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামু উপজেলার গর্জনিয়া খালেকুজ্জামান ব্রিজের সামান্য পশ্চিম দিকে পানির স্রোত থেকে উদ্ধারকৃত লাশটি নদীর তীরে রশি দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকদিন পানিতে ভেসে থাকায় লাশ ফুলে সাদা হয়ে গেছে। উদ্ধারকৃত লাশের পায়ের তালু বড় ও শরীরিক গঠন দেখে লাশটি নিখোঁজ পাইরু মুরুংয়ের বলে অনেকে ধারণা করছেন।
উল্লেখ্য, নিহত পাইরু মুরুংয়ের স্ত্রী ও চার সন্তান রয়েছে।