Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল: প্লট আকারে বিক্রি হচ্ছে বনভূমি

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় উত্তর বন বিভাগের অধিনস্থ ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ডুলাহাজারা বন বিটের আওতাধীন জায়গায় প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় দিন দিন উজাড় হতে চলেছে সরকারি বনাঞ্চল। বনের এ জায়গা দখল করে প্লট আকারে বিক্রির মাধ্যমে দিব্যি নির্মিত হচ্ছে অবৈধ বসতি ও স্থাপনা নির্মাণ। জায়গা দখলের কারণে ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে সামাজিক বনায়ন।

বন বিভাগকে তোয়াক্কা না করে সরকারি দলের প্রভাব বিস্তার করে এ দখল যজ্ঞে মেতে উঠেছে উপজেলার ডুলাহাজারা এলাকার স্থানীয় বেশ কিছু প্রভাবশালী সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতা। ওই সব নেতাদের ভয়ে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে খোদ সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মকর্তারা। শাসক দলের নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ার সুবাধে বিভিন্ন ভাবে ধর্মীয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে দখল করে রেখেছে বেশ কিছু বন বিভাগের সরকারি জায়গা। এসব জায়গা বর্তমানে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিক্রি হচ্ছে বনের রিজার্ভ জায়গা। এমনকি, ধর্মীয় রীতির বাইরে গিয়ে বন বিভাগের জায়গায় প্রতিনিয়ত নির্মিত হচ্ছে নানা বসতি ও স্থাপনা। এমনই গুরুতর অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় বেশকিছু অসাধু বন জায়গিরদারদের যোগসাজসে এ দখলযজ্ঞ চলছে। আর এসব দখলযজ্ঞে জড়িত রয়েছে জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, হেডম্যানসহ বেশ কিছু এলাকার চিহ্নিত বনখেকোরা। এসব দেখেও নিরব ভূমিকা পালন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তাগণ।

জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের অধিন ডুলাহাজারাস্থ রংমহল, হাতিপাড়া ও অলিবাপের ঝুম এলাকায় অবৈধ ভাবে নতুন নতুন নির্মিত হচ্ছে স্থায়ী বসতি ও স্থাপনা।

স্থানীয় কয়েক গরীব-অসহায় পরিবার বলেন, প্রতি কড়া জায়গা বসতি থেকে নেয়া হয়েছে ন্যুনতম ৭০/৮০ হাজার টাকা। আর রংমহল এলাকায় সরকারি কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক নেতা প্লট আকারে বন বিভাগের জায়গা বিক্রির মাধ্যম তার নেতৃত্বে বনভূমি দখলের হিড়িক অব্যাহত রেখেছে। এসব দখলের পেছনে স্থানীয় বন কর্মকর্তার সম্পৃক্ত রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানান, শুক্রবারে (১৬ ফেব্রুয়ারি) উল্লেখিত বন বিভাগের জায়গার মধ্যে হাতি পাড়া এলাকায় সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ বনকর্মী নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বেশকটি অবৈধ বসতি ও স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়। অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পরপরই প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ফের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব বসতি নির্মাণকারী হলেন, নুরুল আবছার, ছলেমা খাতুন, নুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গির আলম।

ছলেমা খাতুনকে এ নিয়ে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা নগদ টাকা দিয়ে এ বসতি জায়গা কিনেছি। এখানে এত বাধা বিপত্তি হবে আমরা তা আগে জানতাম না।’

এদিকে বন বিভাগের জায়গায় বসতি দখল দেওয়া রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহসও পাচ্ছে না স্থানীয় সচেতনমহল।

অভিযোগে জানান, কয়েকদিন পূর্বে উপজেলার এক রাজনৈতিক নেতাকে ডাকঢোল পিঠিয়ে বরণ করে আমন্ত্রণ করেন। ওই নেতার মাধ্যমে বনবিভাগের জায়গাটি ফুটবল খেলার মাঠের নাম দিয়ে দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে একটি দখলবাজ চক্র। উল্লেখিত বনভূমি জায়গাটি সংখ্যালঘুর লোকনাথ আশ্রম সংলগ্ন হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। বনবিভাগ প্রদত্ত ব্যক্তি মালিকানাধীন সামাজিক বনায়ন জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ভাবে পক্ষে-বিপক্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সংগঠনের সভাপতি মিন্টু জানায়, বনবিভাগের জায়গা দখলে নিতে এটি একটি নতুন করে ষড়যন্ত্র মাত্র। ব্যক্তি মালিকানাধীন সামাজিক বনায়ন দখল ও আমাদের উপাসনালয়ের পার্শ্বে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে ফুটবল খেলার মাঠ নাম দিয়ে জায়গা দখলের পায়তারা চালাচ্ছে প্রভাবশালী দখলবাজরা। এ অবৈধ কর্মকাণ্ডে অনুমোদন দেওয়া হলে কঠোর আন্দোলনে নামবেন বলে জানায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের অধীনস্থ ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবদুল মতিনের বলেন, সামাজিক বনায়ন বা বনবিভাগের জায়গা দখলে নিয়ে প্লট আকারে বিক্রি করার এবং খেলার মাঠ তৈরিতে আমি কাউকে অনুমতি দিইনি এবং দেবও না। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিপো) যদি অনুমতি দেয় তাহলে সেটা আমার বিষয় নয় বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন