Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মানবিক বিপর্যয়ের কবলে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা বস্তি

উখিয়া প্রতিনিধি:

আশ্বিনের অঝোর বষর্ণ ও পাহাড়ি ঢলে হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের মাঝে চরম দূর্ভোগ নেমে এসেছে। আশ্রয়হীন শত শত রোহিঙ্গা আশ্রয়ের আশায় অনিশ্চিত যাত্রার দিকে এগিয়ে গেলে ও আশ্রয় মিলছেনা। নারী-শিশুদের দুর্ভোগ যেন অবর্ণনীয়। কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে পাহাড়ী ঢলে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা মানবিক বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত হত্যাযজ্ঞ ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকরা আশ্রয়ের অভাবে এমনিতে বিপন্ন মানবতার জীবনযাপন করছে। মাথা গোঁজার ঠাই মেলেনি এখনো। খোলা আকাশের নিচে অথবা পলিথিনের চাউনি দিয়ে একটু আশ্রয়স্থল করলেও অনেকেই খোলা আকাশের নিচে কোন রকম বাস করছে।

এরই মধ্যে গত ৪দিন ধরে প্রবল বর্ষণে একাকার হয়ে পড়ে দুর্ভোগ ও দুর্দশার কবলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার। বৃষ্টিতে ভিজে রোদে পুড়ে এক অহসনীয় জীবনযাপন বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে তাদের।

কক্সবাজারের উখিয়া বালুখালীতে গড়ে উঠা নতুন রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয় নেওয়া আয়েশা বেগম (৪৮) ও ছৈয়দ জামাল (৫৫) জানান, মিয়ানমারের মংডু গ্রাম হতে ৭ দিন পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে স্বামী সন্তান সহ ৫ জন বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তারা আরো বলেন এখনো মাথা গোঁজার ঠাই মেলেনি। তদুপরী বৃষ্টিতে ভিজে সবাই অসুস্থ এখন।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বয়স্ক আমেনা এ প্রতিনিধিকে বলেন,  মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কুতুপালং ও বালুখালীতে বিভিন্ন পাহাড়ী বন, জঙ্গল ও খালের কিনারে কোন রকম আশ্রয় নিলেও সেখানেও আশ্রয় মিলছেনা। একমাত্র মাথা গোঁজা জায়গাটিও কেড়ে নিচ্ছে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি।

কুতুপালং ক্যাম্পের ধলা বিবি (৩৭) বলেন সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি শেষ হলে প্রচন্ড রোদ। এরই মধ্যে ২ বছরের কন্যা শিশু ও ৫ বছরের ছেলে মুনিয়া নিয়ে থাকবো কোথায়। স্বামী আব্দুলকে সেনাবাহিনী সদস্যরা ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করার বর্ণনা দিয়ে তিনি হাউ মাউ করে কেঁদে উঠেন।

মিয়ানমারের রাচিদং গ্রামের বাচা মিয়া (৬০) ও আব্দুল মোনাফ (৫২) জানান, প্রায় ১৫ হাজার রোহিঙ্গা ঝুঁপড়ি ঘর পাহাপি ঢলে তলিয়ে গেছে। ত্রাণের অভাবে ও কাঁদা মাটিতে একাকার হওয়ায় রান্না-বান্না প্রায় বন্ধ। এমনিতে এক বেলা খেতে পারলেও অনেক সময় উপোস থাকতে হয়। ছোট ছোট শিশু সন্তানদের নিয়ে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে এক দুর্ভোগের দিন পার করছি।

জেলা প্রসাশক মো. আলী হোসেন বলেন, উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৬টি পয়েন্টে লঙ্গরখানা চালু করা হয়েছে। প্রতি দিন ১লাখ বিপন্ন রোহিঙ্গাদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য কুতুপালং মুধুর ছড়া পাহাড়ি এলাকায় ২ হাজার একর বনভূমি জায়গা নির্ধারন করা হয়। ওই জায়গায় গড়ে তুলা হবে নতুন শরণার্থী ক্যাম্প। তাবু তৈরির কাজ শেষ হলে আশ্রয়হীনদেরকে পুর্ণবাসন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন প্রদেশে ১০টি স্টেট পুলিশ পোষ্টে হামলার অভিযোগ তুলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যা, বাড়ী ঘরে অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, নীপড়ন শুরু করে। সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ দেখে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী পুরুষ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।

ইউএনএইচসিআর ও আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এক জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মম হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে এই পর্যন্ত ১০ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন