প্রধান শিক্ষক কর্তৃক লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সিলগালা

pic-21-09

লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবানের লামা উপজেলায় লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের কক্ষ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসাইন কর্তৃক বিধিহির্ভূত ভাবে সিলগালা করার অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থী ও অভিবাভকরা।

অভিযোগে জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ইং বুধবার মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বান্দরবান জেলা ও লামা উপজেলা প্রশাসন সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতামত ছাড়া কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে, কাউকে অবহিত না করে প্রধান শিক্ষক সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত সিদ্ধান্তে সিলগালা করেছেন। এর ফলে লামার মাধ্যমিক পর্যায়ের সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় অর্ধশত বছরের ঐতিহ্য, গৌরব ও সম্মান হারানোর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বলে জানায় বিদ্যালয়ের অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা। এই কোন্দলের কারণে নিয়মিত পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে বলে জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, মূলত স্কুলের বিভিন্ন অর্থনৈতিক আয় ব্যয় হিসাব ও বেসরকারী খাতে আদায় করা অর্থ সহ বিভিন্ন খাত হতে প্রাপ্ত বরাদ্দ সমূহ আত্মসাৎ করতে না পারায় ও সহকারী শিক্ষকরা তাতে সম্মতি না দেয়ায় প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসাইন পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে দূর্নীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে।

এইসব ছোটখাট সমস্যা সমূহ অভ্যন্তরীনভাবে সমাধানের সূযোগ থাকলেও কতৃপক্ষ ও বাহিরে জানাজানি করে বিদ্যালয়ের জন্য নিবেদিত প্রাণ সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে বদলী করে বিদ্যালয়ে একনায়কতন্ত্র পরিবেশ সৃষ্টি তার মূল উদ্দেশ্য। যেখানে বিদ্যালয়ে ২৮ জন শিক্ষক এর সৃষ্ট পদের বিপরীতে মাত্র ৮জন শিক্ষক আছে সেখানে শিক্ষক সরানোর চেষ্টা বিদ্যালয়ের স্বার্থক্ষুন্ন ছাড়া আর কিছু নয় বলে জানায় অভিভাবকরা ছাত্র ছাত্রী সহ ও স্থানীয় সচেতন মহল।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন শিক্ষক এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধান শিক্ষক খন্ডকালীন শিক্ষক সহ সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলীদের সাথে সবসময় দূর্ব্যবহার করা সহ ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দিয়ে অপমান করান। তিনি অরো বলেন শিক্ষক সংকটের মধ্যেও আমারা সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি কিন্তু প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার হল ডিউটির সম্মানীসহ বিভিন্ন অর্থ আত্মসাৎ করে আমাদরকে ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত করে।

আরো জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা গত ১১জুলাই ২০১৬ইং থেকে শুরু হয়ে ২৬ তারিখ শেষ হয়। কিন্তু ২২শে জুলাই অষ্টম শ্রেণীর ফরম পূরণের শেষ সময় হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ৬টি বিষয়ের ফলাফলের ভিত্তিতে যারা পাস করবে তাদের ফরম পূরনের জন্য সিদ্ধান্ত দেয়। তাই ২০শে জুলাই ৬টি বিষয়ের উপর ফলাফল প্রকাশ করা হয় এবং ১৪০ জনের মধ্যে ১০২ জনকে ফরম পূরণ করা হয়।

বিধি বহির্ভুত ভাবে কম্পিউটার ল্যাব সিলগালা করার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসাইন বলেন, রুমটিতে পরীক্ষার খাতার অনিয়মের কিছু তথ্য থাকায় আমি উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করে সিলগালা করেছি।

এই বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয় সিলগালার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আমাকে কিছু জানায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন