প্রত্যাবাসন শুরুর প্রাক্কালে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ালো
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকের সংখ্যা পূর্বের অনুমানের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা সংখ্যা ইতোমধ্যে ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। রোহিঙ্গা নিবন্ধন কার্যক্রমের প্রধান বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তাদের নিবন্ধন করছে বাংলাদেশ সরকার।
গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হয়। তাদের সংখ্যা নিরূপণে আঙুলের ছাপ নিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন শুরু করে বাংলাদেশ।
মিয়ানমারের সঙ্গে প্রাথমিক ব্যবস্থা সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী সপ্তাহ থেকে এদেরকে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
রোহিঙ্গা নিবন্ধন প্রকল্পের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান এএফপি’কে বলেছেন যে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোট ১০ লাখ ৪ হাজার ৭৮২ জনের নিবন্ধন করা হয়েছে।
এছাড়া সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ১২টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার নাগরিকদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬টি ক্যাম্পের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন কাজ এগিয়ে চলছে। পাসপোর্ট অধিদপ্তর নিবন্ধন কাজ বাস্তবায়ন করছে।
মঙ্গলবার কুতুপালং-১ ক্যাম্পে ৬১০ জন পুরুষ, ৫০৩ জন মহিলা মিলে ১ হাজার ১১৩ জন, কুতুপালং-২ ক্যাম্পে ১ হাজার ২৫৩ জন পুরুষ, ৯৯৭ জন মহিলা মিলে ২ হাজার ২৫০ জন, নোয়াপাড়া ক্যাম্পে ১৬৪ জন পুরুষ, ১৬১ জন মহিলা মিলে ৩২৫ জন, থাইংখালী-১ ক্যাম্পে ১১১ জন পুরুষ, ৮৪ জন মহিলা মিলে ২৯৫ জন, থাইংখালী-২ ক্যাম্পে ১৪১ জন পুরুষ, ১৩৯ জন মহিলা মিলে ২৮০ জন, বালুখালী ক্যাম্পে ৭৭৩ জন পুরুষ, ৭৩৫ জন মহিলা মিলে ১ হাজার ৫০৮ জন এবং সারাদিনে ৬টি কেন্দ্রে মোট ৫ হাজার ৫৭১ জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হয়েছে।
এদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক এ পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন এতিম শিশু শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ হাজার ৩৯৫ জন ছেলে এবং ১৮ হাজার ৯৭৮ জন মেয়ে। বাবা-মা কেউ নেই এমন এতিম শিশুর সংখ্যা ৭ হাজার ৭৭১ জন।
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিক সংখ্যা ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৪১০ জন। অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় এ সংখ্যা বাড়ছে। গত বছরের ২৫ আগস্টের আগে আসা মিয়ানমার নাগরিকের সংখ্যা ২ লাখ ৪ হাজার ৬০ জন।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে দেশটির রাজধানী নেপিদোতে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সরকারি পর্যায়ের কাজটি সম্পন্ন হলো। ফেরাতে ২ বছরের মতো সময় লাগবে।
চুক্তির পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন শুরু হবে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর