Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

প্রত্যাবাসন ঘিরে রোহিঙ্গাদের চার দফা দাবি

ঘুমধুম প্রতিনিধি:

স্মার্টকার্ড তৈরি করার বিষয়ে অনীহা প্রকাশের পাশাপাশি যথাযথ সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে প্রত্যাবাসনে আগ্রহী নন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।

এ ছাড়া প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনার দাবিও জানিয়েছেন তারা। এসব দাবি দাওয়া নিয়ে সোমবার (২৬ নভেম্বর) থেকে টেকনাফ, হোয়াইক্যাং, চাকমারকুল ও উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আন্দোলন শুরু করেছেন রোহিঙ্গা সদস্যরা।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে আশ্রয় শিবিরের লোকজন ‘ইউএনএইচসিআর’র কর্তৃক স্মার্ট কার্ড তৈরিতে সহায়তা না করার লক্ষ্যে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এমনকি দোকান বন্ধ রেখে তারা সব কাজ থেকেও বিরত রয়েছেন। ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানা গেছে।

রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন রোহিঙ্গা সদস্যরা।

দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. রোহিঙ্গা রিফিউজিদের স্মার্ট কার্ড নিতে বাধ্য করা যাবে না।

২. স্মার্ট কার্ড নিতে না চাইলে রোহিঙ্গাদের আটক রাখা যাবে না।

৩. স্মার্ট কার্ডে জাতিগত নাম ‘রোহিঙ্গা’ উল্লেখ করতে হবে। স্মার্ট কার্ডে ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক উল্লেখ করা যাবে না’।

৪. বায়োডাটা (পারিবারিক তথ্য) সংগ্রহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ইতোমধ্যে যে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে সেগুলো মিয়ানমার সরকারকে প্রদান করা যাবে না।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়েছি শুধুমাত্র ‘রোহিঙ্গা’ হওয়ার কারণে। তবে রোহিঙ্গা শব্দটির জাতিগত স্বীকৃতি নেই। তাই আমাদের কাছে এটি খুব গুরুত্ব বহন করে। রোহিঙ্গা শব্দটি মিয়ানমার মুছে দিলেও এটি কার্ডে থাকা জরুরি বলে মনে করছেন তারা।

‘ইউএনএইচসিআর’ রোহিঙ্গাদের যে সব তথ্য সংগ্রহ করছে ( আঙ্গুলের ছাপ, চোখের ছাপ, জমির কাগজপত্র ), সে সব মিয়ানমার সরকারকে প্রদান করা হবে। প্রত্যাবাসনে এসব তথ্য প্রয়োজন হবে

তবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ধারণা এসব তথ্যের আলোকে প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালানো হবে। তাই তারা এসব তথ্য যাতে মিয়ানমার সরকারকে না দেওয়া হয় তার দাবি জানিয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই প্রত্যাবাসনসহ অন্যান্য নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ‘তাদের কোনো নেতা নেই’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের কাছ থেকে এ ধরনের কথা শুনতে শুনতেও তারা ক্লান্ত। আমরা এসব বিষয়ে আলোচনা করার দাবি জানিয়েছি বলেন জানান রোহিঙ্গারা। তবে এ বিষয়ে ‘ইউএনএইচসিআর’র কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

টেকনাফ চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরে ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ভূইয়া বলেন, রোহিঙ্গাদের চার দফা সম্বলিত একটি চিঠি আমার হাতে এসেছে। মূলত এই শিবিরের রোহিঙ্গাদের নতুন করে কার্ড করতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের ধারণা, এ কার্ডটি প্রত্যাবাসনের জন্য করা হচ্ছে। তাই এ থেকে বিরত থাকতে তারা ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বাস্তুদের চলাচলের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারা তাদের ইচ্ছামতো যাতায়াত করতে পারবে না। কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তারা শিবিরের বাইরে আসা-যাওয়া করতে পারবে। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি নির্দেশনা থাকায় রোহিঙ্গাদের শিবিরের বাইরে আসা-যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ কড়াকড়ি করায় রোহিঙ্গারা নাখোশ হয়েছে। আমরাতো তাদের ইচ্ছামতো চলাচল করতে দিতে পারি না।

আন্দোলন ও দাবি-দাওয়া নিয়ে মুজিবুর রহমান নামে এক রোহিঙ্গা সদস্য বলেন, ‘এই শিবিরে যেসব ছোট-খাটো দোকানপাট ছিল সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। আবার অনেকে দুই দিন ধরে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। রোহিঙ্গা শিবিরে নতুন করে স্মার্টকার্ডের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে কার্ডে আমাদের রোহিঙ্গা লিখা হচ্ছে না।’

তিনি দাবি করেন, ‘আমাদের রোহিঙ্গা হিসেবে মেনে নিতে হবে। তাহলে আমরা স্ব-ইচ্ছায় ফিরে যেতে রাজি আছি।’

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি, সেখানে কিছু দোকান বন্ধ দেখা গেছে। চাকমারকুল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতীকী অনশনের কথা শুনেছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর দেশটির সেনা নির্যাতনের ফলে গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সদস্য বাংলাদেশে এসেছেন। তার মাধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি। পুরোনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ছোট-বড় ৩০টি ক্যাম্পে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন। পাহাড় ও বন কেটে বেশিরভাগ বসতি গড়েছেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন