পেকুয়ায় স্বেচ্ছাসেবকদল দুই নেতাকে অপহরণের ৬ ঘন্টা পর উদ্ধার

পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের ২ নেতাকে অপহরণের ৬ ঘন্টা পর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। জানাযায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টায় পেকুয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মইজ্যারটেক এলাকা থেকে তারা অপহৃত হন।

অপহৃতদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানাযায়, পেকুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক আহসান উল্লাহ ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আতিক উল্লাহ ভোর ৫ টার দিকে করিমের মালিকানাধীন সিএনজি নিয়ে পেকুয়ার উত্তর মেহেরনামাস্থ বাড়ী থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।

উদ্ধার হওয়া স্বেচ্ছাসেবকদল দল নেতা আহসান উল্লাহ ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, তারা সকাল ৭ টার দিকে চট্টগ্রামের মইজ্জারটেক এলাকায় পৌঁছালে বৃষ্টি শুরু হয়। এরই মধ্যে তিনজন লোক মোটর সাইকেলে করে পেছনদিক থেকে এসে তাদের গতিরোধ করে দুজন সিএনজিতে উঠে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সিএনজি সহ পটিয়ার দিকে নিয়ে যায়। প্রায় একঘন্টা সিএনজি চালানোর পর একটি পাহাড়ী এলাকায় সিএনজি রেখে ছড়া পার করে পায়ে হেঁটে তাদেরকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে বেঁধে রাখে। এসময় সিএনজি ড্রাইভার করিমকে জিম্মি করে রাখে তারা।

এরই মধ্যে অপহরণকারীদের সাথে যুক্ত হয় অপহরণকারীদের আরো ৫ সদস্য। ভয়ার্ত কন্ঠে আহসান উল্লাহ বলেন, কয়েকঘন্টা ধরে আমি ও আতিকুল্লাহকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করার পর কাপড় চোপড় খোলে চোখ বেঁধে ফেলা হয়। আমাদের দুজনকে হাফপ্যান্ট পরিয়ে দেয় তারা। এরপর আমাদেরকে বলা হয়, মরার জন্য প্রস্তুতি নিতে।

তিনি বলেন, এসময় অপহরণকারীদের কয়েকজন রামদা ও অস্ত্র নিয়ে এসে আমাদেরকে জবেহ করে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়। আমি তখন হাউমাউ করে কেঁদে তাদের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চাই। তাদেরকে বলি আমি নতুন বিবাহিত। আমার স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা। আমার যা আছে সব নিয়ে নাও আমার জীবনটা ভিক্ষা দাও। এরই মধ্যে আতিকউল্লাহর কাছে থাকা এনসিসি ব্যাংকের একটি ৪০ হাজার চেক পেয়ে তা ১১টা ৩৫ মিনিটের সময় ব্যাংকটির পটিয়া শাখা থেকে তুলে নেয় তারা। আতিকউল্লাহ জানান, চেকটি তার বোন জামাইকে দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

তারা জানান, এসময় তাদের কাছে থাকা টাকা, মোবাইল নিয়ে কাপড়চোপড় গুলো ফেরত দেয় অপহরণকারীরা। এদিকে অপহৃতদের স্বজনরা সকাল ১০ টার দিকে ঘটনা জানতে পেরে আনোয়ারা থানাকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা খোঁজ নিচ্ছেন বলে স্বজনদের জানান। পরে অপহরণকারীরা তাদেরকে পটিয়ার একটি রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তারা স্থানীয়দের সহায়তায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মেইন রোড়ে এসে চট্টগ্রামের বাসায় চলে যায়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনজুরুল কাদের জানান যেহুতু ঘটনা আমাদের এলাকায় হয়নি সেহুতু বিষয়টি আনোয়ারা থানাকে অবহিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি শুনে সংবাদদাতাদের তথ্য অনুযায়ী নিজেই চাতুরী চৌমুহনী অভিযান চালিয়েছিলাম কিন্তু ঘটনার কোন আলামত পাইনি। পরে শুনলাম তাকে পটিয়ায় পাওয়া গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন