পেকুয়ায় সামাজিক বনায়নের ফরম বিলিতে লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

forrest-tree

নিজস্ব প্রতিনিধি :
পেকুয়ায় সামাজিক বনায়নের উপকারভোগির তালিকাভুক্ত করতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অংশীদারিত্ব বাগানের উপকারভোগিদের মাঝে ফরম বিলির সময় বনবিট কর্মকর্তার নেতৃত্বে এসব টাকা আদায় করা হচ্ছে। এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের আওতায় পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বনায়নের উপকারভোগি নির্ধারনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি ২০১৫-১৬অর্থ বছরে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে প্রায় ১৫০একর পাহাড়ি ভূমি বন্টনের জন্য উপকারভোগিদের মাঝে বনবিভাগ থেকে নির্দেশনা এসেছে। এরই ভিত্তিতে ওই বিটের অধীনে বারবাকিয়া ও সোনাইছড়ি পৃথক মৌজায় উল্লেখিত ভূমি বনায়নের জন্য সরকার উপকারভোগিদের মাঝে বরাদ্ধ দেয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সোনাইছড়ি মৌজার আওতায় ১২৫একর ও বারবাকিয়া মৌজার অধিনে ২৫একরসহ ১৫০একর বনভুমি সামাজিক বাগান সৃজনের জন্য চলতি বছরে বিতরনের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক উপকারভোগির অনুকুলে ১একর করে সর্বমোট ১৫০জনকে ওই প্রকল্পের আওতায় মনোনীত করা হবে।

জানা গেছে, চলতি ২০১৫-১৬অর্থ বছরে ভুমি বিতরনের লক্ষ্যে বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের অধীনে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে স্থানীয়দের মাঝে ফরম বিলি করা হয়েছে।সামাজিক বাগানের উপকারভোগি নির্ধারনের জন্য সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ থেকে সুনিদিষ্ট নীতিমালা দেয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে অংশীদারিত্ব বনায়নে এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসরত স্থানীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভুমি বরাদ্ধ দেয়ার নির্দেশনা আছে।

অভিযোগ উঠেছে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম ওই নীতিমালা অনুসরন না করে স্থানীয়দের বঞ্চিত করে ওই স্থলে দুরবর্তী এলাকার লোকজনকে সামাজিক বাগানের অংশীদার করছেন। ওই বিটকর্মকর্তা উপকারভোগিদের কাছ থেকে প্রতি ফরমে একর প্রতি ৫-৭ হাজার টাকাও হাতিয়ে নিচ্ছেন। সোনাইছড়ি মৌজার এলাকার লোকদেরকে উপকারভোগি নির্ধারন না করে চুড়ান্ত তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে বহিরাগতদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরে বারবাকিয়া বনবিটের ১৫০একর সামাজিক বনায়নের উপকারভোগি প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করনের জন্য তিনমাস আগে স্থানীয়দের মাঝে বনবিভাগ থেকে ফরম সরবরাহ করা হয়েছে। ওই সময় সোনাইছড়ি মৌজার আওতায় ১২৫ একর ভুমির অংশীদারিত্ব’র জন্য প্রায় তিনশত জন স্থানীয়রা ফরম সংগ্রহ করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে সোনাইছড়ি মৌজার বাসিন্দা মনছুর আলম, আহমদ ছবি, আমির হোসেন, আব্দু শুক্কর, ছৈয়দ আলম, বেলাল উদ্দিন, জহির উদ্দিন, জালাল আহমদ জানিয়েছেন, অগ্রধিকার ভিত্তিতে সোনাইছড়ি মৌজার ভুমির অধিকার আমাদের। কিন্তু বিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম সোনাইছড়ি মৌজার লোকদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকদের মনোনীত করার চক্রান্ত করছেন। মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার লোকদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে তাদেরকে ভুমি বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করছেন। ওই বিট কর্মকর্তা পাহাড়িয়াখালী এলাকার মৃত.সিরাজের ছেলে হেডম্যান জালাল আহমদকে দিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫-৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকেও ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে।

বারবাকিয়া বনবিটের হেডম্যান জালাল আহমদ টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, মাত্র ৫০-৬০টি ফরম বিলি হয়েছে। কারো কাছ থেকে একটি টাকাও নেয়া হয়নি। বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, উচ্চতর একটি কমিটি আছে। সরকারি কাজ কারো পক্ষে একা করা সম্ভব নয়। এগুলো একশ পারসেন্ট মিথ্যা কথা। যারা পাননি তারা এসব মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন