পেকুয়ায় লবণের মাঠ দখল নিয়ে উত্তেজনা: পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা

unnamed (2) copy

পেকুয়া প্রতিনিধি:

পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের রগুরদিয়া এলাকায় লবণ মাঠ দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এনিয়ে একপক্ষের মালিকানাধীন দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমিতে অসাধু প্রভাবশালী চক্রের জবর দখল চেষ্টা বন্ধে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিরীহ বর্গা চাষীরা।

মগনামা ইউনিয়নের করিয়াঘোনা এলাকার মৃত আবদুল বারীর পুত্র আবু ছিদ্দিক, মিয়াজীপাড়া এলাকার মৃত নজু মিয়ার পুত্র মো. নুরুল আবছার ও মটকাভাংগা কুমপাড়া এলাকার মৃত সামশুল আলমের পুত্র জসিমউদ্দিনসহ স্থানীয় বর্গা চাষীরা বলেন, একই ইউনিয়নের মরহুম রমিজ আহমদ চৌধুরীর পুত্র দু’সহোদর এরফানুল হক চৌধুরী ও আহসানুল হক চৌধুরীর উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানাধীন উপজেলার মগনামা মৌজার আর এস খতিয়ান নং-৩৮০, আর এস দাগ নং-৩৩৩৫এর আন্দর মোতাবেক বিএস ৯৯২নং খতিয়ানের বিএস ৫২২২দাগের ৭.৯৫ একর জমি মোতাবেক দিয়ারা জরিপের মাঠ পর্চা ডিপি ২৩৭৭ নম্বর খতিয়ানের ৭.১১ একর জমির প্রকৃত মালিক হন। বিরোধীয় জমির ১৮ কানি জায়গায় তারা পৈত্রিক সূত্রে ৪০-৪২ বছর, কেউবা ১৫-২০ বছর আবার কেউবা ১০-২০ বছর ধরে লাগিয়ত নিয়ে বর্গা চাষী হিসাবে লবণ উৎপাদন করে আসছি।

কিন্তু সম্প্রতি ওই লবণ চাষের জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো. আলমগীরের। তিনি দাপট দেখিয়ে দীর্ঘদিনের বর্গা নেয়া লবণ মাঠের জমি জনৈক মমতাজ কামাল চৌধুরীর নিকট থেকে লাগিয়ত নিয়েছেন উল্লেখ করে আমাদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছেন। তার দাবিকৃত চাঁদা না দিলে চলতি বছরের চাষাবাদ বন্ধ ও লবণ মাঠের দখল কেড়ে নেওয়ার হুমকি প্রদান করছেন।

এমনকি তিনি পেকুয়া থানায় অনেকের নামোল্লেখ করে হয়রানীমূলক মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশনা মোতাবেক আমরা থানায় শালিসী বৈঠকে যোগদান করি। থানা পুলিশ দু’পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ শেষে ন্যায় সংগতভাবে আমাদের চাষাবাদ বৈধতার পক্ষে মত দেন। এতে প্রভাবশালী অসাধু ওই জনপ্রতিনিধি থানার ওসি ও পুলিশকে বসে নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের বর্গা চাষের লবণ মাঠে চাষাবাদ বন্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।

কিন্তু পেকুয়া থানা পুলিশের বলিষ্ঠ ভূমিকায় তাতে তিনি ব্যর্থ হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরবর্তীতে ওই প্রভাবশালী স্থানীয় থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পত্র-পত্রিকায় একতরফা সংবাদ প্রচার করে প্রশাসনের বিভিন্ন মহল ও এলাকার সচেতন ব্যক্তিদের বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে। এছাড়াও আমাদের দীর্ঘদিনের বর্গা দখল নিতে লবণ চাষের জমিতে ভীতিকর মহড়া ও হুমকি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছেন ওই প্রভাবশালী।

ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আজিম বলেন, বিরোধীয় লবণ চাষের মাঠ প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি মো. আলমগীরের পক্ষে নেওয়ার কোন বৈধতা নেই। ইতিপূর্বে একই জমি স্থানীয় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম. কফিল উদ্দিন বাহাদুরকে জুড়িশিয়াল স্ট্যাম্প চুক্তিমুলে লাগিয়ত দেন ওই প্রতারক মমতাজ কামাল চৌধুরী। পরে জমি পরিদর্শন ও দখলে গিয়ে কোন স্বত্ব বৈধতা না পেয়ে তারা সরে দাঁড়ান। ছাত্রলীগ নেতা কফিলের মতো একইভাবে অবৈধ চুক্তিমুলে এসব জমি দাবি করছেন মেম্বার আলমগীর। যা নিয়ে বিরোধীয় লবণ মাঠের ১৮ কানি জমি জবর দখলের চেষ্টাও চালাচ্ছেন তিনি।

অন্যদিকে জমির প্রকৃত মালিক মরহুম রমিজ আহমদ চৌধুরীর পুত্র দু’সহোদর যথাক্রমে এরফানুল হক চৌধুরী ও আহসানুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, দানপত্র স্বত্বমূলে বিরোধীয় জমির মালিক লুৎফুন নাহার চৌধুরী। তার ওয়ারিশ মুলে আমরা। এনিয়ে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশান মামলা নং-৯২২৯/০৮ মুলে আমাদের পক্ষে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান রয়েছে।

কথিত মালিক দাবিদার মমতাজ কামাল চৌধুরী বা তার পোষ্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আলমগীর আমাদের মালিকানাধীন লবণ চাষের জমি জবর দখলের চেষ্টার কোন আইনগত বৈধতা ছিল না, থাকতে পারে না। ওই জনপ্রতিনিধি যে লাগামহীন মিথ্যাচার ষড়যন্ত্রে মেতেছেন তাতে সংঘাত ও উত্তেজনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই আমরা উর্ধ্বতন প্রশাসন ও কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ব্যাপারে স্থানীয় এমইউপি আলমগীরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ওনার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে অনেক বার কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি বলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভাব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন