পেকুয়ায় মসজিদের মাইক ও সৌর প্যানেল লুট

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
পেকুয়ায় এবার হত্যা মামলার আসামীদের সমাজের মসজিদের মাইক, ব্যাটারী, সৌর প্যানেল ও বৈদ্যুতিক বাল্বসহ নানা সরঞ্জাম লুট করে নিয়েছে দূর্বৃত্তরা। এ সময় বাদি পক্ষের লোকজন আসামীগনের বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট ও তান্ডব চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে মামলা রুজুর পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজন সম্ভাব্য হামলা ও হতাহতের ভয়ে বাড়ি ছাড়া হয়ে অনত্রে পালিয়ে গেছে বলে জানান এলাকাবাসী। আর এ সুযোগে ছিরাদিয়া এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘর এখন হয়ে পড়েছে জনশুন্য।

গত ৯ অক্টোবর শুক্রবার সকালে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ছিরাদিয়া এলাকায় কাইসার উদ্দিন, দানু মিয়া, আফতাব উদ্দিন গংদের বাড়িতে হানা দেয় একদল দুর্বৃত্ত। গত ৬ অক্টোবর মৎস্য ঘেরের বিরোধ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘঠে। এ সময় গুলিতে কফিল উদ্দিন নামে এক যুবক নিহত ও দু’পক্ষের লোকজন আহত হয়। ওই ঘটনায় কফিল উদ্দিনের পিতা জসিম উদ্দিন বাদি হয়ে গত ৭ অক্টোবর রাতে পেকুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন।

এতে কাইসার উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ২৯জনকে আসামি করা হয়। যানিয়ে বর্তমানে সৃষ্ট ঘটনার জের ধরে ছিরাদিয়া এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা। বাদি পক্ষ ওইদিন থেকে আসামী পক্ষের উপর ক্ষিপ্ত হন। হত্যার ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর ওই দিন থেকে আসামীদের বসতবাড়ি ভাংচুর লুঠপাটসহ ব্যাপক তান্ডব অব্যহত রয়েছে।

ওই দিন দুপুরে তারা অপরপক্ষের আবছারের বাড়ি থেকে ২টি ও মৌ. হেলালের বাড়ি থেকে ২টি গরু ও মালামাল লুট করে নেয়। এসব গরু নদী পার করে পার্শ্ববর্তী উজানটিয়া ইউনিয়নে নেওয়ার পথে সুতাচুড়া এলাকা থেকে পেকুয়া থানা পুলিশ ২টি গরু জব্দ করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। জব্দকৃত গরুগুলি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। গত শুক্রবার সকালে ফের কারান্তরীন আসামী কাইসারের বাড়ি থেকে ১টি, নুরুচ্ছফার ৩টি ও আবছারের ৪টিসহ মোট ৮টি গবাদি পশু দুর্বৃত্তরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ছিনিয়ে নেয়া গরুগুলো পিকআপ ভর্তি করে সদর ইউনিয়নের নন্দীর পাড়া ব্রীজ থেকে গাড়ি বোঝাই করে দক্ষিন দিকে পাচার করে।

জানা গেছে, এসব গবাদি পশু গুলো ঘটনার পর সদর ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি এম. আযম খানের জিম্মায় তার বাড়িতে রাখা হয়েছিল। গত বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে পুর্ব বিলহাঁচুরা এলাকার মৃত,আব্দু জলিলের পুত্র ত্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামী মো.বাচ্চুর বাড়িতে তুলে নেয়া হয়। পরে, শুক্রবার ভোরে বাচ্চুর পুত্র রোকন, জামাতা আজিজ উদ্দিন, ভাতিজা রুবেল ও আফতাব উদ্দিনসহ আরো কয়েকজন সরাসরি ছিনিয়ে নেয়া গরুগুলো গাড়ি বোঝাই করে অন্যত্রে পাঁচার করে দেয়। মৌ. হেলালের স্ত্রী আয়েশা আক্তার এপ্রতিবেদককে জানিয়েছেন এখন তারা বাদী পক্ষের হুমকি ধমকি উৎপাতে বাড়িঘরে থাকতেতো পারছেনইনা উপরন্তু ভুগছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়।

তিনি আরো বলেন, সংঘঠিত ঘটনার সাথে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজনের কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা ছিলনা। ঘটনার দিন তার স্বামী কর্মস্থল চট্টগ্রামের পটিয়ায় ছিলেন। তারপরেও সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আযম খান ক্ষমতার দাপটে তার স্বামীকে হত্যা মামলায় আসামি করেছেন। তারা এখন আবার তাদের বাড়িঘরে লুঠপাট সহ তান্ডব চালিয়ে গৃহপালিত গবাধি পশু ও মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তাদের ২টি গরু ও বসতঘরের মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয়া হয়েছে। একই কায়দায় গত রবিাবার দিন-দুপুরে আসামী পক্ষের সামাজিক জামে মসজিদের মাইক, ব্যাটারী, সৌর প্যানেল ও লাইট চুরি করে নিয়েছে বাদী পক্ষের স্বশস্ত্র দূর্বৃত্তরা।

এবিষয়ে জানতে আ’লীগ নেতা আজম খানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ওসি মোঃ আবদুর রকিব আসামীদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা বেআইনী মন্তব্য করে ভুক্তভুগীদের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন