পেকুয়ায় ভাইজান ও দা বাহিনীর দখলে কয়েক হাজার একর বনভূমি

pic bait2

নিজস্ব প্রতিনিধি,পেকুয়া:   
পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জের আওতাধীন তিনটি বনবিটের প্রায় ১১ হাজার একর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অর্ধেকের বেশি বনভূমি বেহাত হয়েগেছে। বনবিভাগ সূত্রে জানাগেছে টইটং বিটের অধিীনে ৩ হাজার ৮শ একর, বারবাকিয়া বিটের অধীনে ৪ হাজার ৬শ ৫০ একর ও পহরচাদা বিটের অধীনে ২৩ শ ৭০ একর বনভূমি রয়েছে। গত ৫ মাসে তিনটি বিটের অধীনে সহস্রাধিক অবৈধ বসতি বসানো হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের দখলবাজ ও বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা মিলে এসব বনভূমি বিক্রি করে দিয়ে সেখানে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে বসতঘর নির্মাণ করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী অনেক জায়গা থেকে পূর্বের দখদারকে উচ্ছেদ করে কানি প্রতি ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টইটং বিটের অধীনের খুইন্যা বিটা, মগশিয়া করম ছড়ি, গুদিকাটা, হাসানের জুম পশ্চিমের জুম, মধু খালী সহ বিভিন্ন ঐলাকায় দীর্ঘদিন আগে থেকে সংরক্ষিত বনভ’মি জবর দখল করে অসংখ্য লোক বসতি স্থাপন করে আসছিল গত ৫ মাসে এসব এলাকায় ৫শতাধিক নতুন বসতঘর স্থাপন করে বনভূমি দখল করা হয়েছে। উপজেলা টইটং ইউনিয়নের শের আলী মাষ্টার পাড়ার রেজাউল করিমের নেতৃত্বে গঠন করা হয় ভাইজান বাহিনী আর পন্ডিত পাড়ার হত্যা ডাকাতি দখলবাজির অভিযোগে অন্তত ১০ মামলার আসামি ডাকাত নাছিরের নেতৃত্বে গঠন করা হয় দা বাহিনী।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পর টইটং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীরই এ দু’বাহিনীর সাথে সমঝোতা করে তারই প্রত্যক্ষ সহায়তায় নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে টইটং এর অপরাধ জগত। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ টইটং পাহাড়ি অঞ্চল ও টইটং এর হর্তাকর্তা এখন ভাইজান বাহিনী ও দা বাহিনী।

এ ব্যাপারে টইটং বনবিট কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে সব নতুন ঘর বাড়ি স্থাপন করা হয়ে তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের আওতায় বারবাকিয়া বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লাইনের শিরা এলাকায় ২০ টি বসতঘর তৈরী করা হয়েছে। ছনখোলার জুম, পাইন্যাছড়ি এলাকা,আবাদি ঘোনা, সবুজ পাড়া, কাট্টবরো শিরা, আগর বাগান, আরগিলার দাঁরা, লম্বা শিরা, বড় চড়া,সংগ্রামের জুম, আবাদিঘোনা এলাকা ছাড়াও ২০০৬, ২০০৮ ও ২০০৯ সালের সামাজিক বনায়নের জায়গায় জবর দখলকারীরা বন বিভাগের লোকজনের সমঝোতায় বসত ঘর স্থাপন করে।

স্থানীয়রা বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ও সামাজিক বনায়নে বসতি স্থাপনে রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমার পাল, বনপ্রহরী মোহাম্মদ সুমন, হেডম্যান জালাল আহমদ সরাসরি জড়িত থেকে ঘর প্রতি একটি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে তাঁরাই বসতি স্থাপনে সহযোগিতা করে থাকে। বনবিভাগের লোকজনের সহায়তায় বনভুমি বেহাত হওয়ার ব্যাপারে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা মো. লিয়াকত হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এব্যাপারে তার সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে বলেন, গত মাস তিনেক ধরে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে ২০ টির মতো বসতঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ১০/১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে বারবাকিয়া রেঞ্জাধীন পহরচাদা বিটের অধীনে শীলখালী ইউনিয়নের সবুজপাড়া, জারুল বনিয়া, সাপেরঘারা, লম্বামুড়া, রিজার্ভপাড়া, ঢালারমুখ, পহরচাদা, হারবাং সহ বিশাল বনভূমিতে নতুন করে দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ওই এলাকার বিশাল আকৃতির বনভ’মি প্রভাবশালীদের দখলে রেখে ডেইরি ফার্ম সবজিখামার গড়ে তুলে চিহ্নিত ভূমিদস্যূরা।

এব্যাপারে পহরচাদা বিট কর্মকর্তা দিলীপ বড়ুয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন