Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

পেকুয়ায় বালু বোঝাই লরির ধাক্কায় জেটিঘাট বিধ্বস্ত

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বালু বোঝাই লরির ধাক্কায় জেটিঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে। শুক্রবার ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম উজানটিয়া করিমদাদ মিয়া চৌধুরী জেটিঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

লরির প্রচণ্ড ধাক্কার আঘাতে উজানটিয়া চ্যানেলের ওই জেটিঘাটের দ্ইু তৃতীয়াংশ বিধ্বস্ত হয়। বাকী অংশটুকু চরম ঝুঁকিতে যেকোন মুহুর্তে বিলিন হয়ে যেতে পারে।

প্রাপ্ত সুত্রে জানা যায়, একটি বালু বোঝাই লরি সোনারগাঁও থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুলের দিকে যাচ্ছিল। এমবি ফাহাদ-আহাদ পরিবহন-১ (কে-১৯৯৪৭) নামের লরিটি উজানটিয়া ক্যানেল হয়ে খুরুস্কুল যাচ্ছিল। চালকের অদক্ষতার কারণে লরিটি চলমান অবস্থায় হঠাৎ সিলেটি বালু বোঝাই লরিটি উজানটিয়া করিম দাদ মিয়ার ঘাটের পার্শবর্তী জেটিঘাটে ধাক্কা দেয়। এ সময় জেটির বেশ কয়েকটি পিলারসহ জেটির দুই তৃতীয়াংশ বিধ্বস্ত হয়। প্রচণ্ড আঘাতে বিএ ডব্লিউ টিএ এর মালিকানাধীন জেটিঘাটের মূল ফাউন্ডেশনে বড় আকারের ফাটল দেখা দিয়েছে।

উজানটিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য এহছানুল হক জানান, রাতে লরিটির ধাক্কায় বিকট শব্দ হয়। এতে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে লরিতে থাকা লোকজনকে উদ্ধার করে। এ সময় প্রশাসনকে খবর দেন স্থানীয়রা।

এ দিকে জেটিঘাটের ইজারাদার সাজ্জাদ ট্রের্ডাসের সত্বাধীকারী যুব সংহতি পেকুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাজ্জাদুল ইসলাম জানায়, করিমদাদ মিয়ার জেটিঘাটের ইজারা নিয়েছেন তারা। আগামী বাংলা সনের বৈশাখ মাস পর্যন্ত তারা ওই জেটি থেকে টোল আদায় করবেন।

ইজারাদার জানান, সিলেটি বালু বোঝাই লরিটি পার্শবর্তী জেটিঘাটে ধাক্কা দেয়। এ সময় জেটির বেশ কয়েকটি পিলার বিধ্বস্ত হয়েছে। জেটির পিলারসহ জেটির অধিকাংশ বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ জেটির আশপাশ এলাকায় কোনো ধরনের যাত্রীবাহী ইঞ্জিন চালিত বোট, নৌকা  ও যাত্রীসহ মালামাল উঠানামায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেটিটি বিধ্বস্ত হওয়ায় তারা টোল আদায়ে অনিশ্চয়তা দেখা এবং ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে অবগতির অভিযোগ দায়ের করেছি। তবে একটি মহল থানা প্রশাসনের যোগসাজসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে লরিটি ছাড়িয়ে নিতে তৎপর চালাচ্ছে।

লরির সারাং মো. সেলিম জানায়, খুরুস্কুলে নৌবাহিনী তত্তাবধানে পাউবোর ব্লক তৈরীর কাজ চলছে। সেখানে তারা ওই বালি নিয়ে যাচ্ছিলেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এর আগেও একটি ট্রলারের ধাক্কায় ঘাটের একটি সিড়ি বিলীন হলেও এটি রক্ষায় কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় এলজিইডি অফিস। বরং কিভাবে দ্রুত সময়ে ট্রলার ছাড়া পেয়ে চলে যান তাও জানা নেই কারো। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারের কোটি টাকার সম্পদ এভাবে বিলীন হওয়ার ব্যাপারে কয়েক দফা জানালেও কোনো টনক নড়ে না স্থানীয় এলজিইডি কার্যালয়ের।

সরেজমিনে ঘাটটি পরিদর্শনে দেখা যায়, স্থানীয়রা জানান ১৯৯৫ সালে উজানটিয়া ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ এলজিইডির অর্থায়নে ঘাটটি নির্মাণ করেন। এরপর থেকে মহেশখালী, মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া সমুদ্রবন্দর, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মগনামায় নির্মিতব্য সাবমেরিন নৌঘাঁটি ও করিয়ারদিয়ার মৎস্য প্রজেক্টসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে এই ঘাটটি।

লবণ ও চিংড়ি ব্যবসায়ী উজানটিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম চৌধুরী মিন্টু বলেন, এই করিমদাঁদ মিয়ার ঘাট দিয়ে উজানটিয়ার উৎপাদিত লবন চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।  ঘাটটিতে সম্প্রতি সময়ে রক্ষণাবেক্ষণে যথেষ্ট অবহেলা ছিল।  এটি রক্ষায় আমরা বিভিন্ন জায়গায় তদবির করেও শেষ রক্ষা হলো না। উজানটিয়ার এত গুরুত্বপূর্ণ ঘাটটি রক্ষায় কর্তৃপক্ষ কেন এগিয়ে আসলো না তা আমার জানা নাই।  আমি মনে করি সরকারের উচিৎ হবে কী কারণে ঘাটটি কীভাবে ধ্বংস হলো তা নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা  নেয়া।  তা না হলে যারা সরকারি সম্পত্তি নস্ট করলো তারা বিচারের মুখোমুখি  হবেনা।

এ বিষয়ে এলজিইডির পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদুল আলম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি  ট্রলারের ধাক্কায় এভাবে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবরটি শুনিনি। তবে এটি খুব শিগগির একটি একশ মিটার জেটিঘাঁট হিসেবে পুন: নির্মাণ করা হবে।

এ ব্যাপরে পেকুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসেন ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন