Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

পেকুয়ায় গ্রেফতার এড়াতে পুরুষ শুন্য গ্রাম, নারীরাও আতঙ্কে

চিংড়িঘের দখলবেদখল নিয়ে সংঘর্ষে ২ ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় পেকুয়ায় গ্রেফতার এড়াতে পুরুষ শুন্য গ্রাম, নারীরাও আতঙ্কে

পেকুয়া প্রতিনিধি:

পেকুয়া সদরের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী এলাকা বিলহাচুরা গ্রাম। নদী বেষ্টিত এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মাছ ও লবণ উৎপাদন কাজে নির্ভরশীল। শিক্ষার মানে একটু পিছিয়ে থাকলেও শান্তি সম্প্রীতির জন্য প্রসিদ্ধ ছিল এ গ্রাম।

কিন্তু একটি চিংড়িঘের জবরদখলকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দুইজনের মৃত্যু ও সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এ গ্রামে এখন শুধুই আতঙ্ক বিরাজমান। পুলিশের দায়েরকৃত অস্ত্র আইনের একটি মামলা ও দুটি হত্যা মামলায় ইতিমধ্যে পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে এ গ্রামটি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে সাবেক ইউপি সদস্য সদ্য আ’লীগে যোগদানকারী মমতাজ উদ্দিন গংয়ের ৪০ বছরের ভোগদখলীয় চিংড়িঘেরটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে জবরদখলের চেষ্টা চালায় স্থানীয় একটি পক্ষ। তাদের হামলায় ঘটনাস্থলে নিহত হয় চিংড়িঘেরটির পাহারাদার নেজাম উদ্দিন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নেজাম উদ্দিনের মরদেহ ও হত্যাকাণ্ড ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করে।

মমতাজ উদ্দিনের মা মোহনা বেগম বলেন, আমার ছেলেরা নির্দোষ। তারা কোন মারামারি করেনি। কিন্তু আমার ছেলেদের ফাঁসাতে প্রতিপক্ষরা আজিজুল হক প্রকাশ রাখাল নামের তাদের নিজেদের একজন লোক নিজেরা হত্যা করে। ওই ঘটনায় তারা এলাকার অনেক নিরহ মানুষ সহ আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার কারণে আমার ছেলে, নাতী ও বয়োবৃদ্ধ স্বামী সবাই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদিকে সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকিতে আমরা নারীরাও রয়েছি চরম আতঙ্কে।

নিহত নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ওই চিংড়িঘেরের পাহারাদার হিসেবে চাকরি করে আসছিল। তিনি চিংড়িঘের মালিকের খুব অনুগত ছিলেন। যে আনুগত্যের কারণে তার জীবন প্রদীপ নিভে গেল। চিংড়িঘের জবরদখল চেষ্টাকারীদের পক্ষ থেকে হুমকি থাকলেও তিনি পিছপা হননি। প্রতিদিন চলে যেতেন ঘের পাহারা দিতে। গত শনিবার প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারায় আমার স্বামী। তাকে জানে মারার পরেও হামলাকারীরা তার মৃতদেহের উপর চালিয়েছে পাশবিক নির্যাতন। শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়া হয় তার গোপনাঙ্গ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলামের স্ত্রী নিলু আরা বেগম বলেন, আমার স্বামী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তার অপর ভাই মমতাজ সাবেক জনপ্রতিনিধি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল কেউ তুলতে পারবেনা কেউ। তারা শান্তপ্রিয় মানুষ। কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় চিংড়িঘেরটি কিছুদিন ধরে চাঁদার দাবীতে জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে স্থানীয় জালাল উদ্দিন নামের এক চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের অনৈতিক দাবি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের এলাকার মানুষ অতিষ্ট। তাঁদের অপকর্ম গুলোর বিরুদ্ধে আমাদের পরিবার সবসময় আইনের আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সাথে কখনো সংঘাতে জড়ায়নি। কিন্তু সংঘবদ্ধ ওই সন্ত্রাসী বাহিনী আইনকে তোয়াক্কা না করে সবসময় সংঘাতের চেষ্টা চালিয়েছে। গত শনিবার সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের চিংড়িঘেরে হামলা চালায়। চকরিয়া থেকে চারটি গাড়ি নিয়ে একদল সন্ত্রাসী এসে হামলায় অংশ নেয়। পরে সেসব গাড়ীসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ। ওইদিন যখন সন্ত্রাসীরা আমাদের আক্রমণ করে, তখন আমাদের পরিবারের সদস্যরা পুলিশের সহায়তা নিয়েছে। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই সন্ত্রাসীরা পাহারাদার নেজামকে হত্যা এবং আমার ছেলে মোহাম্মদ শওকতকে মারধরে গুরুতর জখম করে।

সাবেক ইউপি সদস্য মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী জয়নাজ বেগম বলেন, সন্ত্রাসী দ্বারা আমরা আক্রান্ত হয়েছি। কিন্তু এখন আমরাই অভিযুক্ত। হয়রানীর শিকার। ওই সন্ত্রাসীদের বসতভিটে থেকে হামলার ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ আমাদের নিরপরাধ ছেলে ওয়াহিদ ও শহিদকে আটক করে নিয়ে গেছে। অথচ তারা পুলিশের অভিযানে সহায়তা করেছে। যার ভিডিওচিত্র আমাদের কাছে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পাহারাদার নেজামকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। যা এলাকাবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু রাখাল নামের একব্যক্তি যে নিহত হয়েছে, তাকে কে মেরেছে বা কিভাবে মরেছে তা কেউ দেখেনি। কিন্তু তার মৃত্যু দায় এখন তুলে দেয়া হয়েছে আমাদের পরিবারের নিরহ সদস্যসহ অসহায় এলাকাবাসীদের উপর। হামলাকারীরা ওইসময় শতাধিক রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে। তাদের ছোড়া গুলিতে তো সে মারা যেতে পারে। তাই আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, দয়াকরে বিষয়টি খতিয়ে দেখুন। সত্য তুলে আনুন। নিরপরাধীদের মুক্তি দিন।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, মামলা গুলো তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে ঘটনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে, অবশ্যই অভিযুক্তকে দায়মুক্তি দেয়া হবে। তবে সত্যতা মিললে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন