পেকুয়ায় কোস্টগার্ডের অভিযানে ২টি অস্ত্রসহ আটক নুর মোহাম্মদের চাঞ্চল্যকর তথ্য!

Chakaria Picture 16-05-2016
নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়াদয়া এলাকা থেকে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ২টি অস্ত্রসহ আটক নুর মোহাম্মদের সম্পর্কে অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। অস্ত্রসহ আটকের পর সরেজমিনে গিয়ে এসব চাঞ্চল্যেকর তথ্য পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পেকুয়ার চিংড়িজোন খ্যাত করিয়ারদ্বিয়ায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কোষ্টগার্ডের অভিযানে দুটি লম্বা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। সাথে এক ডাকাতকেও ধৃত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (১৫মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে কোষ্টগার্ডের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদ্বিয়া কোহলিয়া নদীর উত্তরপাড়ে বেড়িবাধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ ওই ডাকাতকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত নুর মোহাম্মদ পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়াদ্বিয়া এলাকার ছাবের আহমদের পুত্র নুর মোহাম্মদ মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কেরুনতলী গ্রাম থেকে এসে করিয়াদিয়ায় নানার বাড়ির পাশে বসবাস শুরু করে।

গতকাল ১৮ মে সকালে সরেজমিনে করিয়াদিয়া এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোস্ট গার্ড কর্তৃক ধৃত ডাকাত নুর মোহাম্মদের বাড়ী ছিল মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিনের কেরুনতলী গ্রামে। সেখানে নানান ধরনের অপরাধ সংগঠিত করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল নুর মোহ্ম্মাদ। তার নেতৃত্বে সেখানে একটি বাহিনী ছিল। তার অত্যাচারে কেরুনতলী গ্রামের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।

বিগত কয়েক বছর পূর্বেও হোয়ানকে পুলিশের অভিযানে একটি একে ৪৭ রাইফেলসহ আটক হয়েছিল নুর মোহাম্মদ। এ মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল নুর মোহাম্মদ। মহেশখালী থানা সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া কোস্টগার্ডের অভিযানে আটক ডাকাত নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনেসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রায় ৪টি মামলা রয়েছে। এসব মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। হোয়ানকের কেরুন তলী গ্রামের বকসু মেম্বার হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী নুর মোহ্ম্মাদ।

গত দুই মাস পূর্বে এসব মামলা থেকে জামিন নিয়ে বের হন নুর মোহাম্মদ। আর জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে এলাকায় ফিরেই শুরু করেন নানান ধরনের অপকর্ম। করিয়াদিয়ার বিভিন্ন জনের মৎস্য প্রজেক্ট ডাকাতি, কোহেলিয়া নদীর উপর দিয়ে চলাচলকারী লবণ ও ফিশিং ট্রলারগুলোকে জিম্মি করে অব্যাহত চাঁদাবাজীসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা নুর মোহাম্মদ সংগঠিত করেনি।

করিয়ারদিয়ার বাসিন্দারা আরো জানান, গত ৩১ মার্চ ইউপি নির্বাচনের পূর্বে স্থাণীয় জাফর আলমের মালিকানাধীন একটি লবণবাহী বোটও ডাকাতি করেছিল নুর মোহাম্মদের নেতৃত্বে একদল ডাকাত। এছাড়াও গত মাসের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় জাফর আলমের মালিকানাধীন একটি স্ক্রেভেটার গাড়ীর যন্ত্রাংশ ও চুরি করেছিল নুর মোহাম্মদ। গত রোববার ২টি অস্ত্রসহ কোস্টগার্ডের অভিযানে আটকের পর থেকে নুর মোহাম্মদ বাঁচাতে পুলিশ ও কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে নানান ধরনের অপপ্রচার শুরু করেছে স্থানীয় একটি মহল।

বদরখালীস্থ কোষ্টগার্ড ষ্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, গত রোববার দিবাগত রাতে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার চিংড়ি প্রকল্পে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল একটি ডাকাত দল। সোর্স মারফত এমন গোপনে বিষয়টি জানার পর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ নুর মোহ্ম্মাদকে গ্রেফতার করা হয়। ওইসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দেশে তৈরী দুটি লম্বা বন্দুক। তিনি বলেন, কোষ্টগার্ডের অভিযান টের পেয়ে অপরাপর ডাকাতরা পালিয়ে যায়। গত সোমবার সকালে উদ্ধারকৃত অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত ওই ডাকাতকে পেকুয়া থানায় সৌর্পদ করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভুইঁয়া বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ওই ব্যক্তিকে আসামি করে সোমবার কোষ্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় একটি অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন